পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC Scam) কর্তৃক ২০১৬ সালের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে বারবার বিলম্ব হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে এই তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় রাজ্যের শিক্ষা মহলে উত্তেজনা বাড়ছে।
এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এখনও এসএসসি ভবনে রয়েছেন, এবং সূত্রের খবর, তিনি তালিকা প্রকাশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যস্ত। তবে, এসএসসি-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এখনও তালিকাটি আপলোড করা হয়নি। গতকাল সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি জানিয়েছিল যে ৩০ আগস্টের মধ্যে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্ট গত বছর ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিল করে। এই রায় সুপ্রিম কোর্টেও বহাল থাকে। আদালতের নির্দেশে এসএসসি-কে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
সূত্রের খবর, এই তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নাম, যার মধ্যে একজন বিধায়কের কন্যা এবং একজন তৃণমূল নেতার স্ত্রীও রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে, তালিকা প্রকাশে বিলম্বের কারণ স্পষ্ট নয়।স্থানীয় সূত্র জানায়, তালিকা প্রকাশের আগে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ে সময় লাগছে। এছাড়া, রাজনৈতিক চাপ এবং আইনি জটিলতাও এই বিলম্বের কারণ হতে পারে।
এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি, তবে তিনি এসএসসি ভবনে দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক করছেন বলে জানা গেছে। এসএসসি-র একটি সূত্র জানায়, “তালিকায় অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম থাকায় এটি প্রকাশের আগে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে বিজেপি এবং সিপিআই(এম), এই বিলম্বের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করছে।
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এসএসসি তৃণমূলের চাপে তালিকা প্রকাশ করতে পারছে না। এই তালিকায় তৃণমূলের ঘনিষ্ঠদের নাম রয়েছে, তাই তারা এটি আটকে রাখছে।” তিনি আরও বলেন, “এটি তৃণমূলের দুর্নীতির আরেকটি প্রমাণ। জনগণের সামনে সত্য প্রকাশ পাওয়া উচিত।”তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুজোর ছুটিতে বেড়ানোর সুখবর! চলবে স্পেশাল ট্রেন!
এই তালিকা প্রকাশে বিলম্বের ফলে চাকরি হারানো শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। অনেকে আদালতের নির্দেশ মেনে চলার জন্য এসএসসি-র উপর চাপ সৃষ্টি করছেন। আগামী দিনে এই তালিকা প্রকাশ হলে তৃণমূল কংগ্রেসের উপর রাজনৈতিক চাপ আরও বাড়তে পারে, বিশেষ করে ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে।