শিক্ষা ক্ষেত্রের অন্যতম আলোচিত ইস্যু হয়ে উঠেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC Recruitment) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিতর্ক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘টেন্টেড’ বা চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগে অন্তর্ভুক্তি নিষিদ্ধ করা হলেও, এসএসসি-র সাম্প্রতিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ফের উঠেছে প্রশ্ন। এই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার (১৫ জুলাই) চলল দীর্ঘ শুনানি। শুনানি শেষে রায়দান আপাতত স্থগিত রেখেছেন বিচারপতিরা।
সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বার্তা
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল, চিহ্নিত অযোগ্য বা ‘টেন্টেড’ প্রার্থীরা কোনওভাবেই ভবিষ্যতের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সেই নির্দেশ মেনে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আগেই জানিয়ে দেয়, এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতেও এই ‘টেন্টেড’ প্রার্থীদের অংশগ্রহণের কোনও সুযোগ রাখা যাবে না। অথচ, নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সেই নির্দেশ কতটা মানা হয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারীরা।
মামলাকারীদের অভিযোগ
এই মামলায় মামলাকারীদের তরফে দাবি করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ২০১৬ সালের প্রণীত বিধিমালার জায়গায় ২০২৫ সালে এসএসসি নিজেই নতুন একটি নিয়ম তৈরি করেছে। এতে শুধু আদালতের নির্দেশই লঙ্ঘিত হয়নি, বরং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মামলাকারীরা এটিকে ‘নিয়োগ প্রক্রিয়াকে রক্ষা করার নামে অপারদর্শিতা’ বলেই অভিহিত করেছেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই মামলার শুনানি চলে। বিভিন্ন যুক্তি, নথিপত্র ও আদালতের পুরনো রায় তুলে ধরে উভয় পক্ষের আইনজীবীরাই নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন। শুনানির শেষে বিচারপতিরা জানান, এই বিষয়ে তাঁরা রায়দান এখনই করবেন না। বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর, তাই কিছুদিনের মধ্যে লিখিত রায় দেবেন তাঁরা।
নতুন নিয়ম ঘিরে বিতর্ক
এসএসসি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের নতুন বিধি শিক্ষাগত ও প্রক্রিয়াগত দিক থেকে আরও উন্নত এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। যদিও এই নতুন বিধিমালায় সুপ্রিম কোর্টের রায় কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, সে নিয়ে আদালত সন্দেহ প্রকাশ করেছে। মামলাকারীদের মতে, এটি মূলত আদালতের নির্দেশ এড়িয়ে টেন্টেড প্রার্থীদের পরোক্ষভাবে সুযোগ দেওয়ার এক কৌশল।
ডুরান্ডের আগেই পঞ্জাব এফসিতে যোগ দিলেন এই তারকা ফুটবলার
প্রতিক্রিয়া
এই মামলার শুনানি ঘিরে শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রবল উত্তেজনা। আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, তাঁরা বহু বছর ধরে যে আইনি লড়াই লড়ে যাচ্ছেন, তা যেন কোনও নতুন বিধির আড়ালে নিষ্ফল না হয়ে যায়। অনেকে আবার আদালতের হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছেন। তাঁদের মতে, যদি সুপ্রিম কোর্টের আদেশ যথাযথভাবে মানা হয়, তবে স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত নিয়োগই হবে ভবিষ্যতের পথ।