নয়াদিল্লি: এসএসসি-র (SSC) নতুন নিয়োগ বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলায় কোনও হস্তক্ষেপই করল না দেশের সর্বোচ্চ আদালত (SSC New Recruitment Rules)। সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এই পর্যায়ে এসে তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও রকম আইনি হস্তক্ষেপ করতে চান না। অর্থাৎ, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ হবে এসএসসি-র ২০২৫ সালের নবঘোষিত নিয়ম মেনেই।
ভিন্ন অংশে হতাশা
এই রায় ঘিরে শিক্ষা দপ্তর এবং প্রার্থীদের একাংশে যেমন স্বস্তি, তেমনই ভিন্ন অংশে হতাশা। সুপ্রিম কোর্ট কার্যত জানিয়ে দিল, নতুন নিয়ম তৈরি করার অধিকার এসএসসি-র আছে, এবং আগের কোনও নির্দেশে বলা হয়নি যে একবার গৃহীত বিধিই চিরস্থায়ী। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার বলেন, “চিহ্নিত অযোগ্যরা এমনিই বাদ পড়ে গিয়েছেন। তাঁরা পরীক্ষায় বসছেন না। যাঁরা আগের থেকে যোগ্য ছিলেন কিন্তু চাকরি পাননি, তাঁদের যদি অতিরিক্ত সুযোগ দেওয়া হয়, তাতে আপত্তির কী আছে? তাঁদের তো পড়ানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে।”
সংশোধিত নিয়োগবিধি ঘিরে বিতর্ক
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিল হয়, এবং প্রায় ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করা হয়। পরে, আদালতের নির্দেশ মেনেই নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি এবং ২০২৫ সালের জন্য একটি সংশোধিত নিয়োগবিধি প্রকাশ করে। তাতেই তৈরি হয় বিতর্ক।
চাকরি হারানো একাংশ পরীক্ষার্থী এই নতুন বিধির কিছু ধারার বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, কেন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হবে? কেন বয়সের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে? এবং সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, চিহ্নিত ‘অযোগ্য’ প্রার্থীরা কেন পরীক্ষায় বসতে পারবে?
নতুন নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে
এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ২০২৫ সালের এসএসসি নতুন নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। তবে হাই কোর্ট স্পষ্ট করেছিল, ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত যাঁরা হয়েছেন, তাঁরা কোনও অবস্থাতেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।
সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, হাই কোর্টের রায় যথাযথ, এবং নিয়োগে হস্তক্ষেপ করার মতো কোনও প্রাসঙ্গিক আইনি ভিত্তি নেই। এই রায়ের ফলে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নিয়োগে দেরি না করে এসএসসি তাদের নির্ধারিত সময়সূচি মেনেই ২০২৫ সালের পরীক্ষার আয়োজন করতে পারবে।
এই রায় নতুন করে গতি দেবে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায়, বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।