স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে সমুদ্রবিলাসে মেতে উঠতে চলেছেন হাজার হাজার পর্যটক। তাদের জন্য এক বিশেষ সুখবর নিয়ে এল দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চালু হতে চলেছে শালিমার–দিঘা (Digha) বিশেষ ট্রেন। জাতীয় উৎসবের এই দিনে সপ্তাহান্তের শুরু, সঙ্গে শনিবার জন্মাষ্টমী ও রবিবারের ছুটি—সব মিলিয়ে চার দিনের লম্বা ছুটি কাটানোর সুবর্ণ সুযোগ মিলছে ভ্রমণপ্রেমীদের হাতে। আর সেই পরিকল্পনাকে আরও আরামদায়ক ও সহজ করে তুলতে রেলের এই বিশেষ উদ্যোগ পর্যটকদের জন্য বড় সুবিধা হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, স্বাধীনতা দিবসে বাড়তি যাত্রী চাপ সামলাতে ১৫ অগাস্ট একটি ১০ কোচ বিশিষ্ট বিশেষ ট্রেন চালানো হবে শালিমার ও দিঘার মধ্যে। এই পরিষেবা মূলত কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকার পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হবে, কারণ সহজেই তারা বঙ্গোপসাগরের তীরে পৌঁছে যেতে পারবেন। পর্যটন ব্যবসায়ীদের ধারণা, এই পদক্ষেপে স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে দিঘায় পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
শালিমার থেকে বিশেষ ট্রেনটি ছাড়বে সকাল ৮টায় এবং দিঘায় পৌঁছবে সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে। প্রায় চার ঘণ্টার আরামদায়ক যাত্রায় যাত্রীরা জানালা দিয়ে পথের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাবেন সমুদ্র সৈকতের শহরে। সকালবেলার এই সময়সূচি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক, কারণ দিঘায় পৌঁছেই তারা গোটা দিন সমুদ্রের ধারে কিংবা আশপাশের দর্শনীয় স্থানে কাটাতে পারবেন।
ফেরার পথে দিঘা থেকে বিশেষ ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে এবং শালিমারে পৌঁছবে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে। এই সময়সূচি বিশেষভাবে উপযোগী তাঁদের জন্য, যাঁরা শুধুমাত্র এক দিনের জন্য দিঘা ঘুরে আসতে চান। সকালে গিয়ে সারাদিন সমুদ্রের ধারে কাটিয়ে বিকেলের এই ট্রেনে ফিরে রাতেই বাড়ি পৌঁছে যাওয়া যাবে, যা পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ছোট্ট ট্রিপের জন্য আদর্শ।
শালিমার থেকে দিঘা যাওয়ার পথে ও ফেরার পথে এই বিশেষ ট্রেন থামবে সাঁতরাগাছি, উলুবেড়িয়া, বাগনান, মেচেদা, তমলুক, কাঁথি এবং জুনপুকুরিয়া স্টেশনে। এর ফলে পথের মধ্যবর্তী এলাকার যাত্রীরাও এই পরিষেবার সুবিধা পাবেন। বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কাঁথি এলাকার বাসিন্দারা দ্রুত ও আরামদায়কভাবে দিঘায় পৌঁছতে পারবেন।
দিঘা-শংকরপুর হোটেলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র জানান, ‘‘আমাদের হোটেলের অতিথিদের অনেকেই ট্রেনে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এই বিশেষ ট্রেন চালু হওয়ায় তাঁদের জন্য যাতায়াত আরও সহজ হবে। ইতিমধ্যেই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হোটেলের বুকিং বেড়েছে। আমরা নিশ্চিত, এই সময়ে দিঘায় পর্যটকের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেশি হবে।’’
সব মিলিয়ে, স্বাধীনতা দিবসের মতো একটি জাতীয় উৎসবে চার দিনের লম্বা ছুটি, সঙ্গে বিশেষ ট্রেন পরিষেবা—সবকিছুই পর্যটকদের জন্য এই সময়টিকে স্মরণীয় করে তুলতে চলেছে। কলকাতা থেকে সমুদ্রের টানে ছুটে চলা হাজার হাজার মানুষের যাত্রা এ বার আরও আরামদায়ক ও দ্রুত হয়ে উঠবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এই উদ্যোগে।