রেল পরিষেবায় গত কয়েক মাস ধরে অনিয়ম ও বিপর্যয়ের প্রবণতা ক্রমশ বাড়তেই থাকায় যাত্রীদের অসুবিধা পাকাপাকিভাবে দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে (South Eastern Railway) ফের একগুচ্ছ ট্রেন বাতিলের ঘোষণা করায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। রেলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২৫ থেকে ৩০ নভেম্বর এই ছয় দিনে মোট ৪০টি ট্রেন পরিষেবা বাতিল করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চক্রধরপুর ও আদ্রা ডিভিশনের রুটগুলো।
কোন কোন ট্রেন বাতিল?
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী—
চক্রধরপুর ডিভিশনে ১৬ জোড়া (৩২টি) ট্রেন
আদ্রা ডিভিশনে ৪ জোড়া (৮টি) মেমু ট্রেন
এই সময়ে সম্পূর্ণ বাতিল থাকবে। রেলের তরফে যাত্রীদের আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে আগামী ছয়দিন পরিষেবার উপর বড়সড় প্রভাব পড়বে।
রেল সূত্রের খবর অনুযায়ী, চক্রধরপুর ডিভিশনে একাধিক রুটে লোকো পাইলট পরীক্ষার কারণে কর্মী সংকট তৈরি হয়েছে। বিভাগের বহু কর্মী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন, ফলে পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা সম্ভব নয়। যাত্রী নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েই দক্ষিণ-পূর্ব রেল এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে আদ্রা ডিভিশনে টানা সাতদিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলবে, যার মধ্যে রয়েছে ট্র্যাক সারাই ও স্থিতিশীলতা পর্যালোচনা, সিগন্যালিং সিস্টেম আপগ্রেড, ওভারহেড তার মেরামত, সেফটি চেক, বিভিন্ন টেকনিক্যাল ফিটিংস প্রতিস্থাপন এই কাজগুলির জন্য বেশ কয়েকটি সেকশনে নির্দিষ্ট সময় রেল চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
প্রতিদিন অফিসগামী ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, “অনেক সময় আগেভাগে নোটিশ না মেলায় হঠাৎ স্টেশনে এসে জানতে পারি ট্রেন বাতিল। এতে সময়, অর্থ, কাজ সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এই ট্রেনগুলিই অনেকের দৈনন্দিন যাতায়াতের মূল ভরসা। তাই বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা খুঁজতে অনেককেই বাধ্য হতে হবে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক কাজ শেষ হলেই পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, যাত্রীরা ভ্রমণের আগে NTES অ্যাপ বা রেলের অফিসিয়াল সাইটে আপডেট দেখে নেবেন,যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
