শিক্ষাঙ্গনে ফের ধর্ষণের হুমকি চিকিৎসককে! কাঠগড়ায় মমতা

uluberia-woman-doctor-harassment-bengal-sukanta-majumdar

হাওড়া: আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে তরুণ চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার আতঙ্ক এখনও কাটেনি রাজ্যের চিকিৎসক মহলে। ঠিক সেই সময়েই ফের এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল হাওড়ার উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, হাসপাতালের মধ্যেই এক মহিলা চিকিৎসককে হেনস্তা করে ধর্ষণের হুমকি দেয় এক হোম গার্ড!

Advertisements

ঘটনার সময় হাসপাতালে কোনও নিরাপত্তাকর্মী উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ করেছেন ওই চিকিৎসক। তিনি জানান, রাতের ডিউটির সময় ওই হোম গার্ড তাঁর প্রতি অশালীন আচরণ করে এবং ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। ওই চিকিৎসকের বয়ান অনুযায়ী জানা গিয়েছে “তিনি চিৎকার করলে সেই হোম গার্ড পালিয়ে যায়, কিন্তু সেই মুহূর্তে একটিও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না,” এমনটাই অভিযোগ তাঁর। বর্তমানে তিনি গভীর মানসিক চাপে রয়েছেন এবং নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন।

জেনে নিন ভাই ফোঁটায় কোন দিক মুখে তিলক দিলে মিলবে ভাগ্য

ঘটনাটি সামনে আসতেই চিকিৎসক মহলে ক্ষোভের ঝড়। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, “আরজিকর থেকে উলুবেড়িয়া একই ধরণের নিরাপত্তাহীনতা চলছে। রাতের শিফটে মহিলা ডাক্তাররা কীভাবে কাজ করবেন, সেটা ভাবা প্রয়োজন।” এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন।

তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন “আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে তরুণ চিকিৎসকের মর্মান্তিক ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রীর উচ্চস্বরে দাবি এখন সম্পূর্ণ উন্মোচিত হয়েছে। সর্বশেষ প্রমাণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজে এই ভয়াবহ ঘটনা।”

Advertisements

“একজন মহিলা চিকিৎসককে হাসপাতালের ভিতরে এক হোম গার্ড হেনস্তা করেছে এবং ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে! ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে কোনও নিরাপত্তারক্ষী উপস্থিত ছিলেন না। বর্তমানে আক্রান্ত চিকিৎসক ভয় ও মানসিক আঘাতে ভুগছেন।”

তিনি আরও বলেছেন “ ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী যতই দায় এড়ানোর চেষ্টা করুন না কেন, তাঁর অদক্ষ পুলিশ প্রশাসনই এর জন্য দায়ী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে বাংলায় নারীরা ভয়াবহভাবে নিরাপত্তাহীন। প্রতিটি ঘটনাই প্রমাণ করে তৃণমূল সরকারের পাপ এখন উপচে পড়েছে।” এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চূড়ান্তভাবে ভেঙে পড়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজেই নারী নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, “বিজেপি প্রতিটি ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। চিকিৎসক সমাজের একাংশ বলছেন, “এই ঘটনা শুধু একটি হাসপাতালের নয়, রাজ্যের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকেই সামনে নিয়ে এসেছে।”