মিলন পণ্ডা, এগরা: উত্তর প্রদেশের নয়ডা থানার পুলিশ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা শহরের একটি লজ থেকে কোটি টাকার বেশি মূল্যের সোনা ও হীরের গয়না সহযোগে দুই মহিলাকে গ্রেফতার (Women arrest) করেছে। চুরি যাওয়া গয়নার বড় অংশ উদ্ধার হওয়ায় দুই জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই মহিলা হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানার সায়া-বেলদা গ্রামের মনি যাদব এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা থানার ষড়রং গ্রামের মামনি জানা। গত মঙ্গলবার রাতে নয়ডার একটি বিশেষ পুলিশ দল এগরায় পৌঁছে স্থানীয় থানার সহায়তায় লজে হানা দিয়ে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে। বুধবার তাদের কাঁথি মহাকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত সাত দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করে। পরে নয়ডা পুলিশ তাঁদের নিয়ে রওনা দেয়।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় এক মাস আগে। দুই মহিলা কাজের সন্ধানে উত্তর প্রদেশের নয়ডায় গিয়েছিলেন। সেখানে একটি বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন পরই তারা সেখানে বিয়ে করে ওই এলাকাতেই বসবাস শুরু করেন। সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু প্রায় সাত দিন আগে নয়ডার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১ কোটি টাকার বেশি মূল্যের সোনা, হীরে ও মূল্যবান সামগ্রী উধাও হয়ে যায়। বাড়ির মালিক প্রথমে নিকট আত্মীয় ও পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, কিন্তু দুই মহিলার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি তাঁদের স্বামীরাও জানতেন না তাঁরা কোথায় গিয়েছেন।
পরিবারটি এরপর বাধ্য হয়ে নয়ডা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের তদন্তে পুলিশ মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে জানতে পারে দুই মহিলা উত্তর প্রদেশে নেই তারা পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা শহরের একটি লজে কয়েকদিন ধরে অবস্থান করছেন। এরপরই নয়ডা থানার টিম সরাসরি এগরায় এসে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালায়।
লজের একটি ঘর থেকে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় এবং উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া সোনা ও হীরের গয়নার বৃহত্তম অংশ। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মূল্য ১ কোটি টাকারও বেশি।
নয়ডা থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের ট্রানজিট হেফাজতে নিয়ে নয়ডায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তদন্ত চলায় আপাতত আরও কিছু জানানো সম্ভব নয়।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দুই মেদিনীপুর জেলার মানুষ হতবাক যে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বিয়ে করা এবং কিছুদিন পরেই এত বড় চুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে দুই মহিলা।
পুলিশের অনুমান, এই চক্রে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চুরি যাওয়া সামগ্রীর বাকি অংশ এবং সম্ভাব্য সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।



