Monday, December 8, 2025
HomeWest BengalSouth Bengalতৃণমূল কাউন্সিলরদের কোন্দলে চেয়ারম্যানহীন পুরসভা

তৃণমূল কাউন্সিলরদের কোন্দলে চেয়ারম্যানহীন পুরসভা

- Advertisement -

শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: ক্ষীরপাই পুরসভায় (Kshirpai Municipality) তৃণমূল কাউন্সিলরদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন সরাসরি প্রশাসনিক অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে গোটা এলাকা। অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের জেরে বর্তমানে চেয়ারম্যানহীন অবস্থায় পড়ে আছে চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের ক্ষীরপাই পুরসভা। ফলে পৌর পরিষেবা এবং উন্নয়নমূলক কাজকর্ম থমকে যাওয়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে।

লোকসভা নির্বাচনে হতাশাজনক ফলের পর দলীয় নির্দেশ অনুসারে ক্ষীরপাই পৌরসভার চেয়ারম্যান দুর্গাশঙ্কর পান কিছুদিন আগেই ঘাটাল মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগ জমা দেন। দশটি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র দুটি ২ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। বাকি আটটি ওয়ার্ডে ভোটে পিছিয়ে পড়ে শাসক দল। দলের এই খারাপ পারফরম্যান্সের দায় বর্তায় প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ওপর। এরপরই দলীয়ভাবে তাঁর পদত্যাগ গৃহীত হয়।

   

নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিকাশ দাসের নাম ঘোষণা করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এখানেই শুরু মূল জটিলতা। সংশ্লিষ্ট ১০ নম্বর ওয়ার্ডেই লোকসভা নির্বাচনে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তাই বিকাশ দাসকে চেয়ারম্যান হিসেবে মানতে নারাজ হয়ে ওঠেন বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। লিখিত আকারে তাঁরা জেলা নেতৃত্বকে জানান যে বিকাশ দাস কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নন। তাঁদের যুক্তি যে ওয়ার্ডে মানুষ তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন, সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে পুরো পৌরসভার দায়িত্ব দেওয়া উচিত নয়।

তারা দাবি করেন, দলের ভিতরে আরও গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ কাউন্সিলর রয়েছেন, যাঁকে দিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব করানো যেতে পারে। এই দাবিতেই কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃত্বের কাছে একাধিক আবেদন পাঠানো হয়। এর ফলে কার্যত স্থবির প্রশাসনিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ক্ষীরপাই পুরসভায়।

বিরোধী বিজেপি স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে সরব। তাদের অভিযোগ, “তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে পৌর উন্নয়ন পুরোপুরি থমকে গেছে। ক্ষীরপাই শহর আজ নেতৃত্বহীন।” বিজেপির মতে, রাজনৈতিক স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করছে, পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। দলের বক্তব্য, আপাতত তত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান হিসেবে সব কাজ দেখছেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান দুর্গাশঙ্কর পান। তাই পরিষেবা বন্ধ নেই। তবে দলের অন্দরে অসন্তোষ যে রয়েছে, তা অভ্যন্তরীণ সূত্রে স্বীকার করছে নেতৃত্বের একাংশ।

ঘোষিত চেয়ারম্যান বিকাশ দাস অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। দলের নির্দেশ পেলেই তিনি দায়িত্ব নেবেন এমনটাই দাবি তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের।

এদিকে, নেতৃত্বহীন পুরসভার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন পুরবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলতে থাকলে নিকাশি পরিষেবা, পানীয় জল, পথ মেরামত, নিত্যদিনের কাজগুলিতেই হবে মারাত্মক প্রভাব। পৌরসভার উন্নয়ন থমকে থাকবে বলে আশঙ্কা মানুষের মধ্যে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular