বাংলাদেশি হিন্দু ইস্যুতে শুভেন্দুর মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর

মিলন পণ্ডা,পূর্ব মেদিনীপুর: মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর হাইস্কুল মাঠে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার পরিবর্তন সংকল্প সভা ঘিরে রবিবার ছিল টানটান উত্তেজনা ও উপচে পড়া ভিড়। এই সভা থেকেই রাজ্য সরকার ও তৃণমূল নেতৃত্বকে তীব্র আক্রমণ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর বক্তব্য, “বাংলাদেশে হিন্দুরা অনুপ্রবেশকারী নয়, তারা শরণার্থী। বাংলায় তারা থাকবে, পালাবে রোহিঙ্গা ও মুসলমানরা।” তাঁর এই মন্তব্যে রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক ছড়িয়েছে।

Advertisements

সভায় উপস্থিত ছিলেন ভগবানপুর বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি সহ বিজেপির জেলা কার্যকর্তা ও নেতৃত্ব। শুভেন্দু অভিযোগ করেন ১৫ বছরের তৃণমূল শাসন রাজ্যকে ২৫ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তাঁর কথায়,“এই সরকার দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন ও ভোটের রাজনীতি ছাড়া কিছুই দেয়নি। বাংলার মানুষ আজ পরিবর্তন চাইছে।”

   

শুভেন্দুর অভিযোগ, তৃণমূল সরকারের ‘সীমাহীন দুর্নীতি, খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এবং মিথ্যাচার’-এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরির লক্ষ্যেই বিজেপি দেশজুড়ে পরিবর্তন সংকল্প সভা করছে। তিনি বলেন, “বিহারের পর এবার বাংলা। কয়েক মাসের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন। বাংলার মানুষের ধৈর্য শেষ হয়ে গেছে। এবার তৃণমূলকে বিদায় জানানোই সময়ের দাবি।”

সভা থেকে শুভেন্দু বলেন, “২০১৭ সালের আগে উত্তর প্রদেশে জঙ্গলের রাজত্ব ছিল। পরিবর্তনের পর সব বদলে গেছে। বাংলাতেও এপ্রিলের পর তৃণমূল আর থাকবে না। যেসব পুলিশ আমাদের নেতাদের মিথ্যে মামলায় জেলে পাঠিয়েছে, তাদের সুদে-আসলে হিসাব দিতে হবে। অত্যাচারীরা শেষ কথা বলে না। পরে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।”

এসআইআর বিতর্ক নিয়ে শুভেন্দুর সুর আরও আক্রমণাত্মক। তিনি দাবি করেন, “রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যে তথ্য ছড়াচ্ছে। ভয় দেখিয়ে ভোটে সুবিধা নিতে চাইছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে তৃণমূল রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।”

Advertisements

তিনি অভিযোগ করেন, “চাকরি দুর্নীতি থেকে কাটমানি, বেআইনি প্রভাব থেকে নারী অত্যাচার—সবক্ষেত্রেই তৃণমূল নেতৃত্ব জড়িত। মানুষ আর এই দুর্নীতি সহ্য করতে পারছে না। বাংলায় সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে বিজেপির পাশে থাকতে হবে।”

শুভেন্দু সরাসরি আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর দাবি, “মানুষ ওদের বিশ্বাস করে না। বাংলার ভবিষ্যৎ এখন বিজেপির উপর নির্ভর করছে।” সভায় বিপুল জনসমাগম বিজেপিকে নতুন আত্মবিশ্বাস দিয়েছে বলে দাবি করেন জেলা নেতৃত্ব।

মুগবেড়িয়ার এই সভার পর রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, শুভেন্দু সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করছেন। যদিও বিজেপির দাবি, এটাই বাংলার সত্যিকারের পরিবর্তনের পথচলা।