শিয়ালদহ: কালীপুজো আসতে আর কয়েকদিন বাকি। আলোর উৎসবকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে চলছে সাজো সাজো রব। কলকাতার অন্যতম ব্যস্ততম রেল ডিভিশন শিয়ালদহেও (Sealdah Division) বাড়ছে যাত্রী চলাচল। প্রতিবছর এই সময় বহু মানুষ পুজোর আলো দেখতে বা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটাতে শহর ও শহরতলিতে যাতায়াত করেন। সেই বিপুল যাত্রী ভিড় সামলাতে এ বছরও আগে থেকেই বিশেষ ব্যবস্থা নিল পূর্ব রেল।
রেল সূত্রে খবর, কালীপুজো ও দীপাবলির সময়ে বিশেষ ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান কার্যকর করা হবে শিয়ালদহ ডিভিশনে। পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উৎসবকালে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আপ লোকাল ট্রেন দমদম ও বিধাননগর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়েই ছাড়বে। এর মধ্যে থাকবে নৈহাটি, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, গেদে, বহরমপুর কোর্ট ও লালগোলার ট্রেন।
দক্ষিণ শাখার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আপ লোকাল ট্রেন, যেমন মাঝেরহাট ও বালিগঞ্জ হয়ে চলা ট্রেনগুলি, শুধুমাত্র ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়েই যাতায়াত করবে বলে জানানো হয়েছে। বারাসতের কালীপুজো প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শনার্থীকে আকর্ষণ করে, আর তাঁদের অনেকেই শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে করেই যান। সেই কথা মাথায় রেখে, বারাসত, বনগাঁ, হাসনাবাদ ও ডানকুনি রুটের সমস্ত আপ লোকাল ট্রেন শুধুমাত্র দমদম ও বিধাননগর স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়েই চলবে।
দূরপাল্লার সমস্ত মেল, এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিও উৎসবকালে দমদম ও বিধাননগরে শুধুমাত্র প্ল্যাটফর্ম ২ দিয়েই যাতায়াত করবে। যদি কোনও কারণে ঘোষিত প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তন করতে হয়, তা যাত্রীদের আগেভাগে জানানো হবে বলে রেল জানিয়েছে।
শিয়ালদহ ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার রাজীব স্যাক্সেনা জানিয়েছেন, “যাত্রী সুরক্ষা রেলের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বের। উৎসবের সময় ভিড় বাড়বে বলেই আগে থেকেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, স্টেশনের বাইরে ৩০০ বর্গমিটার জায়গায় শেড তৈরি করে ‘হোল্ডিং এরিয়া’ হিসেবে ব্যবহার করা হবে, যেখানে অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দমদম, বারাসত, নৈহাটি ও বিধাননগর রোড স্টেশনে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। স্টেশন প্রাঙ্গণে বাড়ানো হবে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ, নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন এবং মহিলা যাত্রীদের জন্য বিশেষ হেল্প ডেস্ক। ভিড় বেশি হলে নির্দিষ্ট এলাকায় সাময়িকভাবে যাত্রীদের দাঁড় করিয়ে তারপর ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে।
রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “পূর্ব রেলের আওতায় কালীপুজো ও দীপাবলির সময়ে যাত্রী সংখ্যা সাধারণ সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাই ক্রাউড কন্ট্রোলের জন্য সময়ের আগে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে রেল বলেছে, ঘোষণাগুলি মনোযোগ দিয়ে শুনতে, নিরাপত্তা কর্মীদের নির্দেশ মেনে চলতে এবং যাত্রীসেবায় নিযুক্ত কর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে।