পুরুলিয়া কাশীপুরে গেরুয়া জোয়ার! তৃণমূল ছেড়ে ১০০০ মহিলার বিজেপিতে যোগ

Purulia Kashipur Women Join BJP

সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া জেলার কাশীপুরে রাজনৈতিক মঞ্চে একটা গেরুয়া জোয়ার উঠেছে, যা তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) জন্য একটা বড় ধাক্কা। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর ২০২৫) স্থানীয় বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে ১০০০-এরও বেশি মহিলা টিএমসি ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (BJP) যোগ দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানে পুরুলিয়া সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো (Jyotirmayবিজেপি) হাত ধরে তাদের বিজেপি-তে স্বাগত জানিয়েছেন। এই ঘটনা টিএমসি-এর বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের প্রতীক, যেখানে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বকে ‘বিভাজন এবং ভয় দেখানোর রাজনীতি’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। বিজেপি নেতারা বলছেন, বাংলার মানুষ এখন জেগে উঠেছে এবং উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টিভঙ্গির সাথে যুক্ত হচ্ছে। এই যোগদানকে বিজেপি ‘নারী শক্তির জয়’ বলে উদযাপন করছে, যা বাংলার রাজনীতিতে নতুন পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisements

কাশীপুরের এই অনুষ্ঠানটি একটা বড় সভায় পরিণত হয়েছে, যেখানে মহিলারা টিএমসি-এর ‘অন্যায়’ এবং ‘নিরাপত্তার অভাব’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। অনেকে বলেছেন, টিএমসি-এর শাসনকালে মহিলাদের প্রতি অবহেলা এবং স্থানীয় উন্নয়নের অভাব তাদের বিজেপি-এর দিকে ঠেলে দিয়েছে। সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো বলেছেন, “আজ এই মহিলাদের যোগদান বাংলার নারী শক্তির প্রমাণ। মোদীজির নেতৃত্বে বিজেপি নিরাপত্তা, সম্মান এবং উন্নয়নের গ্যারান্টি দিচ্ছে। টিএমসি-এর বিভাজনের রাজনীতি আর চলবে না।” এই ঘটনা পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি-এর প্রভাব বাড়ানোর একটা কৌশলগত পদক্ষেপ, যেখানে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে জ্যোতির্ময় ২,০৪,৭৩২ ভোটের ব্যবধানে টিএমসি-এর মৃগাঙ্ক মাহাতোকে হারিয়েছিলেন। কাশীপুর অ্যাসেম্বলি কেন্দ্রে বিজেপি-এর MLA কামলাকান্ত হাঁসদাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং বলেছেন, “জঙ্গলমহলের মহিলারা এখন বিজেপি-এর সাথে, কারণ এখানে সত্যিকারের পরিবর্তন হচ্ছে।”

   

এই যোগদানের পটভূমিতে টিএমসি-এর বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়ছে। পুরুলিয়ার মতো জঙ্গলমহল অঞ্চলে টিএমসি-এর শাসনকে ‘দুর্নীতি এবং অবহেলা’র জন্য দোষারোপ করা হচ্ছে। বিজেপি-এর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই ঘটনাকে ‘মোদী ম্যাজিক’ বলে প্রচার করছে, যেখানে নারী ক্ষমতায়নের প্রকল্প যেমন ‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’ এবং ‘পিএম আওয়াজ’ মহিলাদের আকর্ষণ করছে। স্থানীয় মহিলারা বলছেন, “টিএমসি-এর সময়ে আমাদের নিরাপত্তা ছিল না, বিজেপি-এর সাথে মোদীজির নেতৃত্বে আমরা নিরাপদ এবং সম্মানিত অনুভব করব।” এই অনুষ্ঠানে বিজেপি-এর স্লোগান ‘মোদীর সাথে বাংলা’ বারবার শোনা গেছে, যা আসন্ন স্থানীয় নির্বাচনের জন্য বিজেপি-এর প্রচারণাকে গতি দিচ্ছে।

Advertisements

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ভাইরাল হয়েছে। @Jyotirmayবিজেপি -এর পোস্টে হাজার হাজার লাইক এসেছে, যেখানে ফ্যানেরা লিখছেন, “বাংলার নারী জেগেছে! টিএমসি-এর শেষ সময় শুরু।” টিএমসি নেতারা এই যোগদানকে ‘বিজেপি-এর ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করছেন, কিন্তু স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন এটা টিএমসি-এর ভিত্তি কাঁপানোর লক্ষণ। পুরুলিয়া, যা জঙ্গলমহলের অংশ এবং ২০১৯-২০২৪-এ বিজেপি-এর দুর্গ হিসেবে পরিচিত, এখন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এই ঘটনা বাংলার রাজনীতিতে বিজেপি-এর নারী-কেন্দ্রিক কৌশলের সাফল্য দেখাচ্ছে, যা মমতা ব্যানার্জির ‘কন্যাশ্রী’ এবং ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর মতো প্রকল্পের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। ভবিষ্যতে এমন আরও যোগদান হলে টিএমসি-এর জন্য কঠিন সময় আসতে পারে। সারা বাংলায় এই ‘গেরুয়া জোয়ার’ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা উন্নয়নের নামে মোদীর বাংলা-প্রেমকে নতুন গতি দেবে। বাংলার নারী বলছে—নিরাপত্তা, সম্মান ও উন্নয়নের জন্য বিজেপি-ই একমাত্র বিকল্প!