হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে কর্মী নিয়োগের অভিযোগ, বিজেপি বিধায়কের নামে পোস্টার

হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে কর্মী নিয়োগের অভিযোগ, বিজেপি বিধায়কের নামে পোস্টার

শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: আইআইটি খড়গপুরের অধীনস্থ ডা: শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী হাসপাতালে কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপি বিধায়ক হিরন্ময় চ্যাটার্জির (Hiran Chatterjee) নামে একাধিক পোস্টার পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। হাসপাতালে প্রবেশদ্বার, ওয়ার্ডের বাইরের দেয়াল এবং সংলগ্ন রাস্তায় চোখে পড়ে সাদা কাগজে লাল কালি দিয়ে লেখা নানা অভিযোগের পোস্টার।

Advertisements

পোস্টারগুলিতে হিরন চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ হাসপাতালের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিতে টাকার লেনদেন চলছে এবং সেই কাজে তিনি যুক্ত। প্রতিটি পোস্টারের শেষে লেখা রয়েছে ‘ভারত মাতার জয়’। তবে কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে, তা স্পষ্ট না হওয়ায় শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।

   

অনেকের মতে, হাসপাতালে চলমান ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অসন্তুষ্ট প্রার্থীরাই হয়তো এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন এই ঘটনার আড়ালে। তবে কোনও পক্ষই এখনো বোঝা যাচ্ছে না, কে এই অভিযোগের মালিক।

পোস্টারগুলোতে লেখা, “বিধায়ক হিরন চ্যাটার্জি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ করছো কেন? জবাব চাই। ডা: শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী হাসপাতালে অবৈধভাবে টাকা নিয়ে নিয়োগ বন্ধ করো এমএলএ হিরন চ্যাটার্জি।আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষ এবং এমএলএ হিরন চট্টোপাধ্যায়ের গোপন আঁতাত মানছি না, মানবো না।”

এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়েছে। তৃণমূলের একাংশ পোস্টার প্রসঙ্গে সতর্ক অবস্থান নিয়ে বলছে বিষয়টি জানার পরেই মন্তব্য করা যাবে।

অন্যদিকে, হিরণ চ্যাটার্জি কোনও অভিযোগই মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “জানি না কোথায় কী পোস্টার পড়েছে। আমার নামে অনেক কিছুই লেখা হতে পারে। ভারত মাতার জয় লিখলেই কেউ দোষী হয়ে যায় না। এই পোস্টারের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।”

Advertisements

তিনি আরও জানান, “আইআইটি ডা: শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চিফ পেট্রন হিসেবে আমি পরিষেবার বিষয়টি দেখি। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমার কোনও ভূমিকা নেই। যারা পোস্টার দিয়েছেন, তারা চাইলে আরও পোস্টার দিতে পারেন।”

তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের খড়গপুর টাউন সভাপতি আইয়ুব আলি বলেন, “শুনেছি পোস্টার পড়েছে, কিন্তু ঠিক কী লেখা রয়েছে জানি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরেই মন্তব্য করব।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে বর্তমানে নার্সিং, টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ড সাপোর্ট সহ একাধিক পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। সেই সময়েই হঠাৎ এমন অভিযোগমূলক পোস্টার পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে এটি কি শুধুই ক্ষোভ প্রকাশ, নাকি কোনও বড় দুর্নীতির অভিযোগ?

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বিবৃতি আসেনি। তবে সূত্রের খবর, পোস্টার লাগানোর ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

আইআইটি খড়গপুর হাসপাতাল চত্বর জুড়ে এই পোস্টার-কাণ্ড রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন নজর তদন্ত কতদূর এগোয় এবং এই অভিযোগের সত্যতা মিললে কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আপাতত খড়গপুরবাসী তাকিয়ে হিরণের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং প্রশাসনের ভূমিকার দিকে।