নৈহাটি: বড়মার পুজো (Naihati Baroma Puja 2025) মানেই এক অদ্ভুত ভক্তিমূলক উন্মাদনা। প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যার দিনে নৈহাটির গঙ্গার ধারে অরবিন্দ রোডের বড়মার মন্দিরে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হন মা-দর্শনের আশায়। এই পুজোর মাহাত্ম্য ও জনপ্রিয়তা প্রতিবছর ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
এখন নৈহাটিতে বড়মার একটি স্থায়ী মন্দির গড়ে উঠেছে, গঙ্গার ধারে অরবিন্দ রোডে। সারাবছরই সেখানে ভক্তদের আনাগোনা থাকে। তবে কালীপুজোর দিন, অর্থাৎ দীপান্বিতা অমাবস্যায়, মন্দির এবং আশপাশের এলাকা হয়ে ওঠে ভক্তদের ঢল। নৈহাটি রেলস্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে সামান্য হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন সেই পবিত্র স্থানে।
এই বছর কালীপুজো পড়েছে সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫-এ। অমাবস্যা তিথি শুরু হবে দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে, এবং শেষ হবে ২১ অক্টোবর বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে। ভক্তদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো দণ্ডি কাটা—এই আচার পালন করা যাবে ২০ অক্টোবর ভোর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
পুজোর সময়সূচি:
মায়ের পূজা শুরু হবে ২০ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে, এবং পুষ্পাঞ্জলি হবে রাত ২টায়। এরপরই শুরু হবে মায়ের ভোগ প্রসাদ বিতরণ।
প্রসাদ বিতরণের বিস্তারিত:
২০ অক্টোবর রাত ৩টা থেকে ২১ অক্টোবর সকাল ১০টা পর্যন্ত ভক্তরা মায়ের ভোগপ্রসাদ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রসাদ বিতরণ করা হবে নিচের স্থানগুলো থেকে—
শ্যাম রোডের সুষমা অ্যাপার্টমেন্ট,
জগবন্ধু মোড় সংলগ্ন পুকুরপাড়,
নৈহাটি নরেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়,
নৈহাটি মহেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়।
বিশেষ সন্দেশ প্রসাদ বিতরণ করা হবে নরেন্দ্র ও মহেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। তবে এই প্রসাদ পেতে হলে আগেই কুপন সংগ্রহ করতে হবে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৮ অক্টোবর শনিবার থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বড়মার মন্দির সাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। এই সময় পুজো সংক্রান্ত প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ও ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ চলবে। ২৬ অক্টোবর সকাল থেকে মন্দিরের দরজা আবার খুলে দেওয়া হবে সর্বসাধারণের জন্য।
প্রতি বছরই নৈহাটির বড়মার পুজোয় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। শহর জুড়ে সাজসজ্জা, গঙ্গার ধারে আলোকসজ্জা, আর মায়ের আরাধনায় মেতে ওঠে নৈহাটির মানুষ। ভক্তরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন দণ্ডি কেটে, হাতে শাঁখা-পালা পরে, মায়ের কৃপা লাভের আশায়।
রাতভর চলে পুজো, আর ভোরে ছড়িয়ে পড়ে পুষ্পাঞ্জলির ধ্বনি। গঙ্গার বাতাসে ধূপ-ধুনোর গন্ধে মিশে থাকে মায়ের নামস্মরণ। দীপান্বিতা অমাবস্যার এই পূর্ণ রজনী যেন এক ভক্তির মহোৎসব।