মতুয়াদের আশ্বস্ত করতে ঠাকুরনগরে মমতার বিশেষ কর্মসূচি

Mamata Banerjee Voter Form

বনগাঁ: এসআইআর বিতর্ককে ঘিরে মতুয়া মহলের (Thakurnagar Matua community) আশঙ্কা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারই মধ্যে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার বনগাঁ ও ঠাকুরনগরে এসআইআর বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে বনগাঁ শহরে জনসভা এবং পরে ঠাকুরনগর পর্যন্ত দীর্ঘ পদযাত্রা এই দুই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই এলাকাজুড়ে প্রশাসনিক ব্যস্ততা তুঙ্গে। 

Advertisements

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে বনগাঁ ও ঠাকুরনগর এলাকায় বহিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে এক হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মী। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নজরদারি বাড়াতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বনগাঁ, ঠাকুরনগর ও গাইঘাটায় টহল দিচ্ছেন পুলিশের বিশেষ ইউনিট। সোমবার রাত থেকেই বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন আধিকারিক এলাকায় অবস্থান করে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।

   

মঙ্গলবার দুপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেলিকপ্টারে গাইঘাটা পৌঁছাবেন। সেখান থেকে গাড়িতে বনগাঁ শহরের ত্রিকোণ পার্কে পৌঁছে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। বনগাঁ–চাকদহ সড়কের উপর তৈরি হয়েছে বিশাল সভামঞ্চ। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সভামঞ্চের আশপাশ ছিল উপচে পড়া ভিড়।

সভা শেষে মুখ্যমন্ত্রী গাইঘাটার চাঁদপাড়া থেকে ঠাকুরনগর পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার পদযাত্রায় অংশ নেবেন। রাস্তার দু’ধারে তৃণমূলের পতাকা, ব্যানার ও ফ্লেক্সে ছেয়ে যায় এলাকা। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এসআইআর ইস্যুতে মতুয়া সমাজের উদ্বাস্তু মানুষদের মধ্যে ভয় বাড়ছে। কেন্দ্রের নীতির কারণে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এমনই অভিযোগ তৃণমূলের। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “এসআইআরের নামে মতুয়াদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তাই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দিতেই মুখ্যমন্ত্রী আজ এসেছেন।”

Advertisements

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন কি না, তা শেষ পর্যন্ত স্পষ্ট করা হয়নি। অন্যদিকে, বনগাঁ পুরসভায় সম্প্রতি তৈরি হওয়া অস্থিরতা নিয়েও শহরবাসীর নজর ছিল মমতার সফরের দিকে। পুরসভার ডামাডোল পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেন কি না, তা নিয়েও উৎসাহ ছিল জনমনে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মতুয়া ভোটব্যাঙ্ককে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছে। এসআইআর নিয়ে মতুয়াদের ক্ষোভ বা অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তাই ঠাকুরনগরের এই কর্মসূচি শুধুমাত্র রাজনৈতিক রুটিন নয়, বরং মতুয়া সম্প্রদায়ের মন ফেরানোর গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।