তৃণমূলের মিছিলে চোর স্লোগান ঘিরে তীব্র বিতর্ক

during-sir-tmc-vs-bjp-voter-list-mapping-west-bengal

 মিলন পণ্ডা, খেজুরি: হার্মাদমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের আয়োজিত স্মরণসভা ও পদযাত্রাকে (TMC rally) কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক। অভিযোগ, দুপুরে তৃণমূলের পথযাত্রা কামারদা থেকে বাঁশগড়া যাওয়ার সময় রাস্তার ধারে বাঁধা একটি মাইক থেকে ‘চোর চোর… অভিষেকের পিসি…’ জাতীয় স্লোগান বাজানো হয়। বিজেপির দাবি এই স্লোগান তৃণমূলের ওপরেই ইঙ্গিত করে সম্প্রচার করা হয়েছিল। তবে তৃণমূল পুরো অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে ‘বিজেপির সাজানো চক্রান্ত’ বলছে।

Advertisements

তৃণমূলের অভিযোগ, খেজুরি অঞ্চলে তাদের বিপুল সমর্থন দেখে বিজেপি উত্যক্ত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ শাসকদলের অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভের কারণেই এমন ঘটনায় সামনে এসেছে ‘চোর’ প্রসঙ্গ। দুই পক্ষের তীব্র বাকযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক পরিবেশ।

   

খেজুরি ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি নেতা পবিত্র দাস বলেন, “তৃণমূলের মিছিল এগিয়ে যাওয়ার সময় ‘চোর চোর এটা অভিষেকের পিসি’ বলে যে স্লোগান বাজছিল, তাতে পরিষ্কার তাঁদের নিজেদের কর্মীরাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও অভিষেক ব্যানার্জিকে চোর বলছে। চোরকে চোর বলার মধ্যেই সত্য প্রকাশ পায়।”

তিনি তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, “দেবাংশুবাবু, আপনাদের সভায় আপনাদেরই পিসিমণিকে চোর বলা হচ্ছে—এটাই প্রমাণ করে তৃণমূল আসলে চোরের দল।” অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।

Advertisements

কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি ও খেজুরি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন খান বলেন, “যা প্রচার করা হচ্ছে সবই ভুয়ো। বিজেপি খেজুরিতে নিজেদের ভরাডুবি বুঝে এআই-এডিট করা নকল অডিও ছড়াচ্ছে। এটা অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। খুব তাড়াতাড়ি খেজুরি রাজনীতিতে বিজেপির কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। মানুষের সমর্থন তৃণমূলের দিকেই।”

তৃণমূলের হার্মাদমুক্ত দিবস স্মরণসভা শুরু হয় কামারদা বাজার থেকে। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই পদযাত্রায় অংশ নেন রাজ্য তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক, জেলা যুব সভাপ‍তি জলাল উদ্দিন খান, সহ বহু তৃণমূল নেতা-কর্মী। বাঁশগড়া বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় কয়েক হাজার সমর্থকের জমায়েতে উৎসবের আবহ তৈরি হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খেজুরি অঞ্চল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েনের কেন্দ্র। বিশেষ করে ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি রাজ্যের দুই প্রধান দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।