মিলন পণ্ডা, খেজুরি: খেজুরির রাজনীতিতে ফের চরম উত্তেজনা। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সংখ্যালঘু (Minority families) নেতা শেখ মশিউর রহমান ও তাঁর অনুগামী একাধিক পরিবার বিজেপি ছেড়ে পুনরায় তৃণমূলে ফিরে আসায় নতুন করে রাজনৈতিক ভূমিকম্প তৈরি হয়েছে এলাকায়। রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে কেন্দ্র করেই এই উত্তেজনার সূত্রপাত।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খেজুরি ১ ব্লকের কলাগেছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলাবাড় অঞ্চলের সংখ্যালঘু নেতা শেখ মশিউর রহমানসহ বেশ কিছু পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁদের যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই ও কাঁথি লোকসভা সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী, খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক এবং অন্যান্য জেলা ও মণ্ডল স্তরের বিজেপি নেতৃত্ব। সংখ্যালঘু পরিবারের এই যোগদানকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় অনেকে মনে করেন, খেজুরির সংখ্যালঘু রাজনীতিতে বিজেপি বড়সড় প্রবেশদ্বার পেয়ে গেল।
কিন্তু মাত্র ২৪ ঘণ্টা কাটতেই সব হিসেব ওলটপালট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেখ মশিউর রহমানসহ একই পরিবারগুলি পুনরায় তৃণমূলে ফিরে আসেন। প্রকাশ্যে মশিউর বলেন, “বিজেপিতে কয়েক ঘণ্টা কাটাতেই মনে হচ্ছিল দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাই পুরনো দলে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে চান না বিজেপি নেতৃত্ব। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহসভাপতি তাপস কুমার দলাই বলেন, “এক সপ্তাহ আগেই বিজেপিতে যোগদানের আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনপত্র আমাদের কাছে রয়েছে। পুনরায় তৃণমূলে গেলে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না। শরীর গেছে, মন কোথায় আছে এটাই দেখার বিষয়।”
অন্যদিকে, তৃণমূল এই ঘটনায় স্পষ্ট রাজনৈতিক সুবিধা দেখছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি ও খেজুরি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন খান বলেন, “বিজেপি ভুল বুঝিয়ে কয়েকজনকে দলে টেনেছিল। কয়েক ঘণ্টা যেতেই তাঁরা বুঝতে পারেন ভুল হয়েছে। তাই দলে ফেরার আবেদন করেছিলেন। আমরা তাঁদের গ্রহণ করেছি। ২০২৬ ভোটে মানুষ বিজেপিকে জবাব দেবে।”
পুনরায় তৃণমূলে ফেরা শেখ মশিউর রহমান বলেন, “তৃণমূল আমায় গ্রহণ করেছে, এজন্য কৃতজ্ঞ। আগামী দিনে তৃণমূলের একজন সৈনিক হিসেবে মানুষের পাশে থাকব।” তৃণমূল বিষয়টিকে সংখ্যালঘু ভোটের প্রতি পুনরায় আস্থার প্রতিফলন হিসেবেই দেখছে।


