HomeWest BengalSouth Bengalদ্রুত SIR সম্পন্ন করে নজর কাড়লেন কেশপুরের BLO

দ্রুত SIR সম্পন্ন করে নজর কাড়লেন কেশপুরের BLO

- Advertisement -

শান্তনু পান, মেদিনীপুর: রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) নিয়ে যখন উত্তেজনা, বিতর্ক এবং রাজনৈতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে, ঠিক সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর (Keshpur BLO) ব্লক দেখাল এক নজিরবিহীন উদাহরণ। কেশপুরের ৪ নম্বর গোলাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৬ রতনহাটি বুথের বিএলও মহম্মদ হাম্মাদ আসমান জেলার মধ্যে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ১০০ শতাংশ SIR কাজ সম্পূর্ণ করে রিপোর্ট জমা দিলেন। তাঁর এই সাফল্য জেলা প্রশাসন থেকে সাধারণ ভোটার সকলের মধ্যেই বিশেষ প্রশংসা অর্জন করেছে।

বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে BLO–দের উপর চাপ বাড়ছে। অতিরিক্ত কাজের কারণে কোথাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, কোথাও আবার বাড়তি চাপের বিরুদ্ধে রাস্তা নামছেন। এমনকি মৃত্যুর পথ বেছে নেওয়ার মতো ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে কেশপুরের BLO-র এই দ্রুত কাজ সম্পূর্ণ করা রাজ্যের অন্যান্য BLO–দের কাছে এক বড় অনুপ্রেরণা।

   

মহম্মদ হাম্মাদ আসমান বলেন, “পরিকল্পনা ছাড়া কোনও কাজ সফল হয় না। দায়িত্ব পাওয়ার পরই আমি একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করি। প্রতিদিন ঠিক কতটা কাজ করবো তা নোট করে রেখেছিলাম। তাই খুব অল্প সময়েই ১০০% কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে।”

দোগাছিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক এই BLO-এর বুথ রতনহাটি। সেখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৭১২ জন। ফর্ম বিলি ও সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি দেখেন ১ জন ভোটারকে পাওয়া যায়নি, ৫ জন অন্যত্র স্থানান্তরিত, ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, ফলে ৬৯৮ জন ভোটারের ফর্ম তিনি জমা নেন এবং নিজে হাতে সবগুলোর অনলাইন এন্ট্রিও করেন।

এই নিখুঁত এবং দ্রুত কাজ প্রতিটি পর্যায়ে জেলা ERO-এর নজরে আসে। তিনি হাম্মাদকে সময়ে সময়ে সহায়তা এবং পরামর্শ দিয়ে কাজের গতি বাড়াতে সাহায্য করেছেন। BLO জানান, “ERO মহাশয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাই সমস্যার মুখোমুখি হলেও দ্রুত সমাধান করতে পেরেছি।”

স্থানীয় বাসিন্দারাও তার কাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। রতনহাটি বুথের ভোটার শেখ তাজরুল হাসান বলেন—
“আমাদের বুথের BLO যদি জেলায় প্রথম কাজ শেষ করেন, তা আমাদের গর্বের বিষয়। উনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবার ফর্ম পূরণে সহায়তা করেছেন। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন।”

কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চিত্তরঞ্জন গরাইও তাঁকে বিশেষ অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেশপুরের BLO ও BLA কর্মীরা ভালো কাজ করছেন। কিন্তু হাম্মাদ আসমান এত দ্রুত কাজ শেষ করে জেলার প্রথম হওয়ায় তা বিশেষভাবে প্রশংসাযোগ্য।”

বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের কাছে SIR সম্পূর্ণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রাজ্যজুড়ে যেখানে টেকনিক্যাল সমস্যা, অনলাইন এন্ট্রি জটিলতা, এবং ভোটারদের অনুপস্থিতি নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেখানে কেশপুরের এই অর্জন প্রমাণ করে পরিকল্পনা, মাঠপর্যায়ে নিষ্ঠা, নিয়মিত মনিটরিং।

অন্য BLO–দের উদ্দেশে হাম্মাদ আসমান বলেন, “বিভ্রান্ত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করুন। পরিকল্পনা থাকলে SIR-এর মতো কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায়।” জেলা প্রশাসনের মতে, এই সাফল্য রাজ্যের SIR কার্যক্রমে একটি ইতিবাচক বার্তা দিল এবং অন্যান্য BLO–দেরও উৎসাহিত করবে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular