হাওড়ার (Howrah Incident) বালিটিকুরী মুক্তারাম হাই স্কুলে ঘটে গেল এক অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক ঘটনা। স্কুলের মধ্যেই অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করে কয়েকজন সহপাঠী। ঘটনাটি সামনে আসতেই এলাকা ও অভিভাবক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তা ও ছাত্র-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে স্কুল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।
ঘটনাটি ঘটে স্কুল ছুটি হওয়ার ঠিক পরেই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাঠের এক কোণে কয়েকজন ছাত্রের মধ্যে কোনও তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বচসা শুরু হয়। সেই বচসা মুহূর্তের মধ্যেই বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন ছাত্র মিলে অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে আক্রমণ করে। কিল, চড়, ঘুষি—অভিযুক্ত ছাত্ররা নির্মমভাবে তাকে মারতে থাকে। অসহায় ছাত্রটি চেষ্টা করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। ঘটনা পুরোপুরি ধরা পড়ে স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরায়, যা পরে কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছালে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আক্রান্ত ছাত্রটিকে ঘিরে ধরে ৪-৫ জন ছাত্র পরপর আঘাত করছে। পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠার আগেই স্কুলের কয়েকজন কর্মচারী ও অন্য ছাত্ররা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ছাত্রটিকে উদ্ধার করে। তখনই স্পষ্ট বোঝা যায়, অতিরিক্ত মারধরের কারণে ছেলেটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে। তাকে দ্রুত বাল্টিকুরি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তবে চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি এই ঘটনাটি ওই ছাত্রের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট সুরক্ষিত নয়। তারা প্রশ্ন তুলেছেন—স্কুলের ভেতরে এমন বেপরোয়া মারধর কীভাবে ঘটল? কেন শিক্ষক বা নিরাপত্তা কর্মীরা সময়মতো হস্তক্ষেপ করতে পারলেন না? অভিভাবকদের একাংশ আরও দাবি করেন, স্কুলে ছাত্রদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হিংসাত্মক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িত তিনজন ছাত্রকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করেছে। প্রধান শিক্ষক জানান, “এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ছাত্রদের আচরণ পর্যবেক্ষণে আরও নজরদারি বাড়াচ্ছি। অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে স্কুলের মধ্যেই সচেতনতা তৈরি করা হবে।”
