HomeWest BengalSouth Bengalহাওড়া ডিভিশনে ফের যাত্রী ভোগান্তি, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন

হাওড়া ডিভিশনে ফের যাত্রী ভোগান্তি, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন

- Advertisement -

হাওড়া: ফের দুঃসংবাদ হাওড়া ডিভিশনের (Howrah division) নিত্যযাত্রীদের জন্য। সপ্তাহান্তে আবার বড়সড় ট্রেন বাতিলের ঘোষণা করল পূর্ব রেল। ৯ নভেম্বর, শনিবার ইঞ্জিনিয়ারিং, ওভারহেড ইকুইপমেন্ট (OHE) সংক্রান্ত রক্ষণাবেক্ষণ এবং সিগন্যাল ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ কাজের জন্য হাওড়া ডিভিশনের ১১টি লোকাল ট্রেন সম্পূর্ণ বাতিল থাকবে।

শুধু বাতিল নয়, একটি লোকাল ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষেপ করা হয়েছে এবং আরও দুটি ট্রেনের সময়সূচিতেও বদল আনা হয়েছে। ফলে সপ্তাহের কাজের শেষে যাত্রীদের ভোগান্তি যে চরমে পৌঁছতে চলেছে, তা স্পষ্ট।

   

রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, রেললাইন, সিগন্যাল এবং তারের ওভারহেড নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার মেরামতি ও নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য এই কাজ অত্যন্ত জরুরি। যদিও এটি যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল, তবে ঘনঘন লোকাল ট্রেন বাতিলের কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে অফিস, ব্যবসা, স্কুল–কলেজ, চিকিৎসা প্রয়োজনে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে।

রেলের তরফে জানানো তথ্যানুযায়ী, ৯ নভেম্বর হাওড়া স্টেশন থেকে 37055, 37249, 37363 এবং 36823 নম্বরের চারটি লোকাল বাতিল থাকবে। একইদিন ব্যান্ডেল থেকে 37246 ও 37749, বর্ধমান থেকে 36834, শেওড়াফুলি থেকে 37056, আরামবাগ থেকে 37364 ও 37396 এবং কাটোয়া থেকে 37748 নম্বরের লোকাল ট্রেনগুলিও বাতিল থাকবে। অর্থাৎ হাওড়া, ব্যান্ডেল, বর্ধমান, শেওড়াফুলি, আরামবাগ এবং কাটোয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলগুলিতে লোকাল পরিষেবা ব্যাহত হবে।

শুধু বাতিলই নয়, 37365 হাওড়া–আরামবাগ লোকাল ট্রেনটির যাত্রাপথ সংক্ষেপ করা হয়েছে। ওই ট্রেনটি ৯ নভেম্বর আরামবাগ পর্যন্ত না গিয়ে তারকেশ্বর পর্যন্ত চলবে। তারকেশ্বরের পর যাত্রীরা আর এই ট্রেনের পরিষেবা পাবেন না। ফলে আরামবাগগামী যাত্রীদের বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ ও খরচসাপেক্ষ দুটোই।

এছাড়াও, দুটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। 53009 কাটোয়া–আজিমগঞ্জ লোকাল দুপুর ১২টা বদলে ১২টা ৩০ মিনিটে ছাড়বে। একইভাবে 12338 বোলপুর–হাওড়া শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস নির্ধারিত ১:১৫ মিনিটের পরিবর্তে ১:৫০ মিনিটে বোলপুর থেকে রওনা দেবে। ফলে সংযোগকারী ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহনের পরিকল্পনাতেও প্রভাব পড়তে পারে।

লোকাল ট্রেন বাতিলের কারণে পথে বেরিয়েই বিপাকে পড়ছেন সাধারণ যাত্রীরা। হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন জীবন অনেকাংশেই এই লোকাল পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। সপ্তাহান্তে বাজার, চিকিৎসা, অফিস, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা কিংবা পারিবারিক প্রয়োজন সব ক্ষেত্রে লোকাল ট্রেনই সবচেয়ে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মাধ্যম। ট্রেন বাতিল হলে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা বাস, অটো বা বিকল্প যানবাহনে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন, যেখানে ভাড়া বেশি ও যাত্রার সময় প্রায় দ্বিগুণ।

ব্যান্ডেলের এক নিত্যযাত্রী জানান, “প্রতি সপ্তাহেই ট্রেন বাতিলের নোটিশ দেখছি। রক্ষণাবেক্ষণ কাজ জরুরি, কিন্তু এত ঘনঘন বাতিলে আমাদের দৈনন্দিন রুটিন ভেঙে পড়ছে।” আরামবাগের এক ব্যবসায়ী বলেন, “শনিবার বাজারের গুরুত্বপূর্ণ দিন। ট্রেন বন্ধ থাকলে ক্রেতারা আসতে পারেন না, ব্যবসাতেও ক্ষতি হয়।”

পূর্ব রেলের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই কাজগুলি শেষ হলে পরিষেবা আরও মসৃণ, নিরাপদ ও উন্নত হবে। যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে, ভ্রমণের আগে রেলের NTES অ্যাপ বা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ট্রেনের আপডেট দেখে নিতে এবং বিকল্প পরিবহন পরিকল্পনা করে রাখতে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular