চায়ের দোকানে লরি ঢুকে মৃত এক, আহত ৩

মিলন পণ্ডা, মারিশদা: ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাইক আরোহীর মৃত্যু এবং তিনজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মারিশদায়। দিঘা–নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কে (Digha-Nandakumar highway) তেলিপুকুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পণ্য বোঝাই একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে বাইক আরোহীকে ধাক্কা মারে, তারপর রাস্তার ধারে থাকা একটি চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ে। দুর্ঘটনার তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বাইক আরোহী সুকান্ত মণ্ডল (৫২), যিনি মারিশদা থানার যশাবিশা গ্রামের বাসিন্দা এবং প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য।

Advertisements

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল প্রায় ৯টা নাগাদ কাঁথি দিক থেকে নন্দকুমারের দিকে যাচ্ছিল পণ্য বোঝাই লরি। সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসছিল সুকান্তবাবুর মোটরবাইক। হঠাৎ লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটিকে ধাক্কা মারে এবং পাশের চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ে। দোকানে উপস্থিত তিনজন স্থানীয় বাসিন্দা গুরুতর আহত হন।

   

দুর্ঘটনার পর মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে এবং খবর দেন পুলিশকে। মারিশদা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লরিটি আটক করে ও আহতদের কাঁথি মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহত তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

ঘটনায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় দিঘা-নন্দকুমার জাতীয় সড়কে। প্রায় এক ঘণ্টা গাড়ি চলাচল ব্যাহত হয়। পুলিশ লরিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং চালককে গ্রেফতার করেছে।

Advertisements

মারিশদা থানার ওসি উজ্জ্বল নস্কর জানান, “দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে অতিরিক্ত গতির কারণেই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

মৃত সুকান্ত মণ্ডলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে যশাবিশা গ্রামে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রতিনিয়ত দ্রুতগতির লরি ও ভারী যানবাহন চলাচল করে, কিন্তু পুলিশের নজরদারি নেই বললেই চলে। প্রত্যক্ষদর্শী ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, “অতিরিক্ত গতির জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিনই আমরা ভয় পাই এই সড়ক দিয়ে হাঁটতে। এখানে স্পিড ব্রেকার না থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।”

স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এলাকাটিতে স্থায়ী ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন ও স্পিড ব্রেকার বসানো হোক। বারবার দুর্ঘটনার পরও প্রশাসনের কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ না থাকায় ক্ষোভও বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।