দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে নয়া পদক্ষেপ পুলিশের

durgapur-gang-rape-ti-parade-investigation

দুর্গাপুর: দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা দুর্গাপুরের গণধর্ষণ কাণ্ডে নতুন মোড়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার শিকার মেডিকেল ছাত্রীর মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন (TI) প্যারেড আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বুধবার এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানান, আদালতের অনুমতি পাওয়ার পরই এই টিআই প্যারেড সম্পন্ন করা হবে।

Advertisements

ঘটনাটি ঘটে অক্টোবরের ১০ তারিখ রাতে, দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নিকটবর্তী জঙ্গলে। সেখানে দ্বিতীয় বর্ষের এক এমবিবিএস ছাত্রী তাঁর এক পুরুষ সহপাঠীর সঙ্গে ডিনারে বেরিয়েছিলেন। ফেরার পথে একদল দুষ্কৃতী তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং ছাত্রীটির ওপর ঘটে নৃশংস নির্যাতন।

এপর্যন্ত পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ওই ছাত্রীর সঙ্গে থাকা পুরুষ বন্ধুও। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বন্ধুটি ঠিক কী ভূমিকা নিয়েছিল, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুধবার এক পুলিশ আধিকারিক পিটিআইকে জানান, “তদন্তের অংশ হিসেবে টিআই প্যারেডের আয়োজন করা হচ্ছে। আদালতের অনুমতি চাওয়া হবে। এতে ভিকটিম নিশ্চিত করতে পারবেন যে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরাই সেই রাতে অপরাধে জড়িত কি না।”

এই টিআই প্যারেডের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এটি আদালতে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এতে ভিকটিমের বিবৃতি ও শনাক্তকরণের উপর নির্ভর করবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম বর্তমানে চিকিৎসাধীন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তবে মানসিকভাবে তিনি এখনো গভীর ট্রমায় রয়েছেন। তাঁর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল ও প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

Advertisements

তদন্তকারী দল জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মেডিকেল ও ফরেনসিক প্রমাণ জোগাড়ের কাজও জোরকদমে চলছে। আগামী ১৬ অক্টোবর বা তার পরদিন ভিকটিমের পুরুষ বন্ধুরও মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন এক সিনিয়র অফিসার।

ঘটনার পর থেকেই দুর্গাপুর শহর ও আশপাশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ সবাই অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। সামাজিক সংগঠনগুলো হাসপাতালের সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদও জানিয়েছে।

তবে পুলিশের এই দ্রুত পদক্ষেপ, টিআই প্যারেডের সিদ্ধান্ত এবং মেডিক্যাল তদন্তের অগ্রগতি সবই দেখাচ্ছে, কর্তৃপক্ষ এই মামলাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। শেষ পর্যন্ত ধর্ষিতা এবং তাঁর পরিবারের একটাই আশা ন্যায়বিচার। তাঁরা চান, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস না পায়।