দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা তার জোরালো উপস্থিতি জানিয়ে দিল। নিম্নচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যের দক্ষিণ ও উত্তর দু’প্রান্তেই বৃষ্টির দাপট চলছে। আকাশের মুখ ভার, একনাগাড়ে বৃষ্টি, আর সঙ্গে দমকা হাওয়া — এই চিত্রটাই এখন একাধিক জেলায় চোখে পড়ছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, এই পরিস্থিতি চলবে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত।
কলকাতায় মেঘলা আকাশ, চলবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি
শুক্রবার সকাল থেকেই শহরের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও অত্যন্ত বেশি৷ সর্বাধিক ৯৮% এবং ন্যূনতম ৯০%। ফলে বৃষ্টির ফাঁকে রোদ উঠলে বাড়তে পারে অস্বস্তিকর অনুভূতি।
দক্ষিণবঙ্গজুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস South Bengal Monsoon Rain
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে কোনও কোনও জেলায় ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। বর্ষার এই সক্রিয়তা কৃষি-নির্ভর জেলাগুলিতে কিছুটা স্বস্তি দিলেও, শহরাঞ্চলে জনজীবনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
কোথায় কোথায় ভারী বৃষ্টি?
আগামী কয়েক দিনে কিছু নির্দিষ্ট জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ২৫ জুন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
২২, ২৩ ও ২৪ জুন: উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পাহাড়ি অঞ্চলে অতিবৃষ্টি হলে ধসের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টির প্রবণতা জারি
উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টি চলবে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের মতো পাহাড়ি জেলায় ভারী বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়ার আশঙ্কা থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নদী ও পাহাড় ঘেঁষা এলাকায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
তাপমাত্রার খুব একটা পরিবর্তন নেই
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গ- দুই এলাকাতেই আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রায় বড় কোনও হেরফের হবে না বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে আর্দ্রতা বেশি থাকার ফলে ভ্যাপসা অস্বস্তি বজায় থাকবে।
দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসে গিয়েছে পূর্ণ দাপট নিয়ে। বৃষ্টির জল কৃষিতে সহায়ক হলেও শহরাঞ্চলে জলজট, যানজট, ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে এবং আবহাওয়ার আপডেট নজরে রাখতে।