কলকাতা, ১৬ সেপ্টেম্বর: বাংলায় বেজে উঠল SIR বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের দামামা (SIR Campaign)। ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI) বাংলায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) কর্মসূচির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ থেকে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু করেছে।
এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রাজ্যের সকল জেলায় বুথ লেভেল অফিসার (BLO), ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট দেরকে SIR-এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হবে। ১৯ তারিখের মধ্যে BLO দের ট্রেনিং শেষ করতে হবে সাফ জানাল নির্বাচন কমিশন।
বিহারে ইতিমধ্যে SIR শুরু হয়েছে এবং প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে, সেই ধারাবাহিকতায় বাংলায় এই কর্মসূচি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, এই প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হলো ভোটার তালিকাকে আরও স্বচ্ছ এবং নির্ভুল করা, যাতে জাল ভোটার বা অবৈধ নামের অন্তর্ভুক্তি রোধ করা যায়। SIR এর প্রশিক্ষণ শুরুর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে খুব তাড়াতাড়ি বঙ্গে শুরু হতে চলেছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন।
SIR-এর প্রক্রিয়া মূলত ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পর্যালোচনা। এই প্রক্রিয়া প্রত্যেক বুথ লেভেলে দরজা থেকে দরজায় যাওয়া এবং নথিপত্র যাচাইয়ের উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে শেষবার ২০০২ সালে এই SIR হয়েছিল, এবং এবারের জন্য ২০০২ সালের তালিকাকে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকার সঙ্গে তুলনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতি মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে মোট ১১ টি নথির তালিকা দেওয়া হয়েছে যা প্রমান হিসেবে দেখিয়ে ভোটার তালিকাতে নাম তোলা যাবে।
শেষ কালে আধার কার্ডকেও মান্যতা দিয়ে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। SIR মূলত করা হবে ২০০২ এর তালিকার ভিত্তিতে। সেখানে যাদের নাম আছে তাদের জন্য কোনো প্রামাণ্য নথি দরকার হবে না। যাদের ২০০২ এর তালিকাতে নাম নেই কিন্তু তাদের মা কিংবা বাবার নাম ২০০২ এর তালিকাতে থাকলে তারাও প্রামাণ্য নথি দেখিয়ে নাম তুলতে পারবেন নয়া ভোটার তালিকাতে।
রাজ্যের চিফ ইলেকটোরাল অফিসার (সিইও) মনোজ কুমার অগরওয়ালের নেতৃত্বে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে, যাতে রাজ্যের ৮১,০০০-এরও বেশি বুথকে কভার করা যায়। সিইও অফিসের সূত্র জানাচ্ছে, আজ থেকে শুরু হওয়া প্রশিক্ষণে প্রথমে ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যারা পরবর্তীতে বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এই প্রক্রিয়ায় রাজ্যের ৭৯,০০০ বিএলও নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন, এবং তাদেরকে দৈনিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার গ্যানেশ কুমার ১৮-১৯ সেপ্টেম্বর রাজ্য সফর করবেন এবং SIR-এর প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করবেন। এর আগে, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০০২ এবং ২০২৫ সালের তালিকার তুলনামূলক কাজ শুরু হয়েছে, যাতে প্রত্যেক ভোটারের নাম, পিতা-মাতার নাম এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হবে।
ITR-এর শেষ তারিখ মিস করলে হারাবেন HRA এবং হোম লোন ইন্টারেস্ট সুবিধা
যদি কোনো ভোটারের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না থাকে, তাহলে তাদের পিতা বা মাতার নামের ভিত্তিতে যাচাই করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় অনলাইন আপডেট এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অগ্রগতি মনিটরিং করা হবে। সিইও অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, “এই SIR-এর মাধ্যমে রাজ্যের ভোটার তালিকাকে আরও শক্তিশালী করা হবে, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়।”