শঙ্কর দাস, বালুরঘাট: অবশেষে পাহাড় বেয়ে হাঁটা পথে নদী পেরিয়ে গ্যাংটক পৌঁছলেন সিকিমে (Sikkim) আটকে থাকা বাংলার পর্যটকরা। গ্যাংটক পৌঁছেই সিকিম (Sikkim) সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। তবে দুঃস্বপ্নের সেই পথে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির জওয়ানদের তরফে পাওয়া সহযোগিতার কথা স্বীকার করতে ভুলেন নাই।
গত ১২ জুন সিকিমের গ্যাংটক থেকে ইউমথাং ঘুরতে গিয়েছিলেন পর্যটকটরা। পরদিন ১৩ জুন প্রবল বৃষ্টিতে লাচুং নদীর উপরের ব্রিজ ভেঙে সিকিমের অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ইউমথাং সহ ঐ অঞ্চল। শুধু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াই নয়, বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে যায়। পানীয় জলের পাশাপাশি খাবারেরও সংকট দেখা দেয়।
এই অবস্থাতেই টানা পাঁচদিন ধরে ইউমথাং ও লাচুংএর বিভিন্ন হোটেলে, কেউবা রাস্তায় গাড়িতেই সপরিবার আটকে থাকেন। লাগাতার আবহাওয়া খারাপ থাকায় সেনাবাহিনীও তাদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। আবহাওয়া আরও খারাপ হওয়ার আশংকায় অবশেষে মঙ্গলবার সকালে পর্যটকরা নিজেরাই ঝুঁকি নিয়ে ঐ এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে বাধ্য হন।
বড় হোঁচট শুভেন্দুর, বিরোধী দলনেতার আর্জি খারিজ করল হাইকোর্ট
আটকে থাকা পর্যটকদের মধ্যে ছিলেন গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্রও। বুধবার বিকেল নাগাদ শিলিগুড়ি পৌঁছে তিনি লাচুং থেকে গ্যাংটক পৌঁছানোর যে বর্ণনা দিতে গিয়ে অভিযোগ করেন যে আতঙ্কের দিন গুলিতে সিকিম সরকারের তরফে তাঁরা কোন সহযোগিতা পান নাই।
তিনি জানিয়েছেন লাচুং থেকে গাড়িতে কোন মতে ৪০-৪৫ কিমি দূরেত্বে টুং পর্যন্ত পৌঁছান। সেখান থেকে পাহাড়ি চড়াইউৎরাই-এর হাঁটা পথে কয়েক কিমি দূরে স্থানীয় এক নদী তীরে পৌছায়। সেখানে আইটিবিপির জওয়ানদের সহযোগিতায় গাছের গুঁড়ি দিয়ে তৈরী অস্থায়ী সাঁকোয় পায়ে হেঁটে খরস্রোতা নদী পেরোতে হয়। ওপারে লরিতে চেপে দুই আড়াই কিমি পথ পেরিয়ে আবারও ফের দুই আড়াই কিমি হাঁটা পথ।
বড় অভিযোগ, ববিকে বহিষ্কার রাজ্য নেতৃত্বের
সব চেয়ে বিপদসংকুল হাঁটা পথ ছিল মঙনের প্রায় আট দশ কিমি আগে। প্রায় একশো মিটার খাড়া পাহাড় বেয়ে পাথর ধরে নিচে নামতে হয়েছে মহিলা শিশু সহ সকলকে। সেখানেও প্রবল স্রোত ডিঙিয়ে গাছের গুঁড়ি ও নুড়ি বেয়ে নদী পেরোনো। তাঁর পর রাত আটটা নাগাদ মঙন পৌঁছান। সেখান থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করে রাত্রি এগারো নাগাদ গ্যাংটক পৌঁছেছেন সকলে।
পর্যটকদের ঐ দলে থাকা মালদা জেলার শর্বরী মিত্র জানিয়েছে পাঁচদিন ধরে লাচুংএর ওপারে আটকে থাকা যেমন তেমন সেখান থেকে গ্যাংটক পৌঁছানোটা যেন দুঃস্বপ্ন। একজন মহিলা হয়ে পাশাপাশি পথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর জওয়ানদের প্রশংসাও তিনি করেছেন।
বড় হোঁচট শুভেন্দুর, বিরোধী দলনেতার আর্জি খারিজ করল হাইকোর্ট