শাকসবজির (Vegetable Price) মূল্যবৃদ্ধি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। বর্তমান সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে ঢুকলেই ক্রেতাদের মুখে একটাই প্রশ্ন—এই দাম কেন এত বেশি? চলুন দেখে নেওয়া যাক, বর্তমানে কলকাতার বাজারে কোন কোন শাকসবজির দাম কেমন এবং কী কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।
কাঁচা তরিতরকারির বর্তমান দর
বাজারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বড় পেঁয়াজের বর্তমান দর কেজিপ্রতি ₹৩৬ হলেও পাইকারি বাজারে এটি ₹৪১ থেকে ₹৪৬ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এটির দাম ₹৪৩ থেকে ₹৫৯ পর্যন্ত পৌঁছেছে। ছোট পেঁয়াজের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, বর্তমানে এটি ₹৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা খুচরা বাজারে ₹৮২ থেকে ₹১১২ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
টমাটো : টমাটোর ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি টমাটোর দাম ₹২৯ থেকে ₹৩২ হলেও খুচরা বাজারে এটি ₹৩০ থেকে ₹৪১ টাকার মধ্যে রয়েছে। সবুজ লঙ্কার দামও বেড়ে ₹৪৮ টাকায় পৌঁছেছে, যা খুচরা বাজারে ₹৫৮ থেকে ₹৭৯ পর্যন্ত হতে পারে।
আলু : আলুর দাম ₹৪০ হলেও এটি ₹৪৮ থেকে ₹৬৬ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বীটের বাজারমূল্যও ₹৪১ থেকে ₹৬৮ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে।
অন্যান্য শাকসবজির মূল্যপরিস্থিতি
শুধু প্রধান সবজি নয়, অন্যান্য শাকসবজির মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতাও লক্ষণীয়। যেমন—
কাঁচা কলার দাম ₹৮, কিন্তু খুচরা বাজারে এটি ₹১০ থেকে ₹১৩ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ক্যাপসিকামের পাইকারি দর ₹৪৮ থেকে ₹৫৩ হলেও খুচরা বাজারে এটি ₹৫০ থেকে ₹৬৯ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
গাজরের দাম ₹৫২ থাকলেও, এটি ₹৬২ থেকে ₹৮৬ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
ফুলকপির পাইকারি বাজারমূল্য ₹৩০ থেকে ₹৩৩, কিন্তু খুচরা বাজারে এটি আরও বেশি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে—
প্রাকৃতিক দুর্যোগ – বন্যা, খরা এবং অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের ফলে ফসলের উৎপাদন কম হচ্ছে, যার ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাচ্ছে।
পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধি – জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে পরিবহণ ব্যয় বেড়েছে, যা সরাসরি শাকসবজির দামে প্রভাব ফেলছে।
চাহিদা ও জোগানের অসামঞ্জস্য – কিছু নির্দিষ্ট মরসুমে চাহিদা বেশি থাকলেও সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকায় দাম বাড়ছে।
মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ রীতিমতো নাজেহাল। অনেকেই এখন প্রয়োজনের তুলনায় কম সবজি কিনছেন বা বিকল্প খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষত নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য এই মূল্যবৃদ্ধি আরও বেশি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক পরিবারই কম দামি সবজির দিকে ঝুঁকছে, যা পুষ্টিগত দিক থেকে ততটা ভালো নয়।
শাকসবজির দাম বৃদ্ধি বর্তমানে এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা গেলে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দাম কিছুটা কমতে পারে। এখন দেখার বিষয়, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে সাধারণ মানুষের স্বস্তির জন্য।