কলকাতা: নিজের বিধানসভা এলাকায় পা রাখতেই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে একটি সভাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার পথে মালডাঙা ও মন্তেশ্বর বাজারের মাঝামাঝি এলাকায় তাঁকে কালো পতাকা ও ঝাঁটা দেখান তৃণমূলেরই একাংশ কর্মী-সমর্থক।
বিক্ষোভকারীদের মুখে স্লোগান ওঠে,“সিদ্দিকুল্লা মন্তেশ্বরে তোমাকে চাই না।” মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠে তোলা, দুর্নীতি ও এলাকা-বিমুখতার অভিযোগ। এমনকি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় উত্তেজিত জনতার।
“তোলাবাজ-ধান্দাবাজ-চিটিংবাজ মন্ত্রী”
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য, অঞ্চল সভাপতি ও ব্লক মহিলা সভানেত্রী। তাঁদের অভিযোগ, মন্ত্রী একজন ‘পরিযায়ী বিধায়ক’, যিনি এলাকাবাসীর কোনো সমস্যায় পাশে থাকেন না। চার বছরের বেশি সময় পার হলেও সাধারণ মানুষ তাঁর কাছ থেকে কোনও পরিষেবা পাননি।
মন্তেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, “আমাদের এখানে একজন তোলাবাজ মন্ত্রী আছেন। তিনি শুধু তোলা বোঝেন, পরিষেবা নয়। মানুষ চাল-গম না পেলেও সার্টিফিকেট বা লাইব্রেরি সংক্রান্ত প্রয়োজন থাকলেও সঠিকভাবে মেলে না। তিনি এখন দালালি করতে এসেছেন।”
পরিকল্পিত অপপ্রচার, দাবি মন্ত্রীর siddiqullah chowdhury faced protest
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি জানান, পুরো বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত এবং দলের মধ্যেই কিছু নেতা তোলাবাজির বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের জন্য এভাবে তাঁকে হেয় করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, “এই অপপ্রচার এবং বিক্ষোভের বিষয়টি আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবো।”
২০২৬-এর নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত মন্তেশ্বর
দলের একাংশ ইতিমধ্যেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে না চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে পোস্টার ও স্লোগান-সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে।
দলীয় নেতৃত্ব এখন কী পদক্ষেপ নেন, সেটিই দেখার বিষয়। তবে মন্ত্রীর নিজের কেন্দ্রেই এই ধরনের গণবিক্ষোভ যে আগামী দিনে তৃণমূলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে, তা বলাই বাহুল্য।