Shuvendu Voices Concern Over Journalist Harassment
সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় এবার মুখ খুললেন শুভেন্দু অধিকারী (shuvendu)। পশ্চিমবঙ্গে চাকরি কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে বিজেপি যুব মোর্চার ‘কালীঘাট চলো’ কর্মসূচিতে পুলিশের তৎপরতা এবং সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। গতকাল, ৭ এপ্রিল, এই আন্দোলনের সময় পুলিশের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দাগী অপরাধীদের মতো আচরণ করেছে।
এই ঘটনায় সাংবাদিকদেরও হেনস্থা করা হয়েছে বলে দাবি উঠেছে, যার মধ্যে রাজ্যের জনৈক সংবাদ মাদ্ধমের এক সাংবাদিকের উপর হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা প্রেস ক্লাব এবং বড় সংবাদমাধ্যম সংস্থাগুলোর নীরবতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।
বিজেপি যুব মোর্চার ‘কালীঘাট চলো’ কর্মসূচি
বিজেপি যুব মোর্চার ‘কালীঘাট চলো’ কর্মসূচি ছিল চাকরি চুরির অভিযোগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী পদক্ষেপ। এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন কালীঘাটের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়া। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ এই মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী (shuvendu) দাবি করেছেন, “মমতা পুলিশ আন্দোলনকারীদের টেনে-হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তুলেছে। গোটা বাংলার মানুষ এই দৃশ্য চাক্ষুষ করেছেন।” তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমও পুলিশের আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কলকাতা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসিপি) অভিজিৎ সমাদ্দার জনৈক সাংবাদিকের কলার চেপে ধরে পেছন থেকে আক্রমণ করছেন। এই ঘটনায় নির্ভীক সাংবাদিকরা তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। শুভেন্দু বলেন, “সাংবাদিকরা তাঁদের কাজ করছিলেন—খবর সংগ্রহ। এটাই সাংবাদিকদের কাজ। কিন্তু মমতা পুলিশ তাদের মালিকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক খবর প্রকাশ ঠেকাতে সব পন্থা অবলম্বন করছে।”
Grand Annadaan Drive of Radhe Guru Maa on Ram Navami and Akshaya Tritiya
কলকাতা প্রেস ক্লাবের নীরবতায় ক্ষোভ (shuvendu)
এই ঘটনার পর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সমালোচনা উঠেছে কলকাতা প্রেস ক্লাব এবং বড় সংবাদমাধ্যম সংস্থাগুলোর উদাসীনতা নিয়ে। শুভেন্দু অধিকারী (shuvendu) কটাক্ষ করে বলেন, “কলকাতা প্রেস ক্লাব শীতঘুমে আছে। সংবাদমাধ্যম সংস্থাগুলোর বড় কর্তারা উদাসীন। পুলিশের এই ঘৃণ্য আচরণের বিরুদ্ধে কলকাতা প্রেস ক্লাবের কোনও বিবৃতি নেই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, এই নীরবতার পেছনে রাজনৈতিক তোষণের একটি বড় কারণ রয়েছে। তাঁর মতে, প্রেস ক্লাবের কর্ণধাররা এবং উচ্চপদস্থ সাংবাদিকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডন ভ্রমণে সঙ্গী হয়ে ‘উচ্ছিষ্ট গ্রহণ’ করার সুযোগ পেয়েছেন। এমনকি, তিনি দাবি করেন, এই কর্ণধাররা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁবেদারি দেখাতে গিয়ে ‘পিছনে হাঁটার’ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে নিজেদের ‘ভাঁড়’ প্রমাণ করেছেন।
“এই নীরবতা তাঁদের কাছ থেকে প্রতিদান হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একজন সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে শক্ত শিরদাঁড়া দেখানোর প্রয়োজন, যা এঁদের নেই,” বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু।
সাংবাদিকদের ভূমিকা
জনৈক সংবাদ মাদ্ধমের সাংবাদিকের উপর হামলার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় দেখা যায়, তিনি মিছিলের খবর সংগ্রহ করার সময় পুলিশের হাতে হেনস্থার শিকার হন। বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, এই ধরনের আচরণ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর আঘাত। শুভেন্দু বলেন, “ নির্ভীক সাংবাদিকরা প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক খবর মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। আমি তাঁদের কুর্নিশ জানাই এবং পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করছি।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিজেপি নেতারা এটিকে রাজ্যে গণতন্ত্রের অবসানের প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরছেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা পুলিশ দলদাস হয়ে কাজ করছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন।” অন্যদিকে, সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এই ঘটনার সমালোচনা করে বলছেন, সংবাদমাধ্যমের উপর হামলা গণতান্ত্রিক অধিকারের লঙ্ঘন।
কলকাতা প্রেস ক্লাবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
কলকাতা প্রেস ক্লাবের নীরবতা নিয়ে সাংবাদিক মহলেও প্রশ্ন উঠছে। অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনায় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ এবং সংহতি জানানো উচিত ছিল। একজন সাংবাদিক বলেন, “আমাদের সহকর্মীর উপর হামলা হচ্ছে, অথচ প্রেস ক্লাব চুপ। এটা লজ্জার।” তবে প্রেস ক্লাবের কোনও কর্মকর্তা এখনও এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।
‘কালীঘাট চলো’ কর্মসূচিতে পুলিশের আচরণ এবং সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নিগৃহীত সাংবাদিকের মতো ,মানুষেরা তাঁদের কাজ চালিয়ে গেলেও, প্রেস ক্লাব ও বড় মিডিয়া সংস্থার নীরবতা অনেক প্রশ্ন তুলেছে। এই ঘটনা কীভাবে গণতন্ত্র ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে প্রভাবিত করবে, তা ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে।