২৪ এর লোকসভা ভোটে কারচুপির অভিযোগ শুভেন্দুর

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Shuvendu) ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, নির্বাচনের দুটি…

Samik Bhattacharya to Lead Major Reshuffle in West Bengal BJP; Suvendu Adhikari’s Faction at Risk

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Shuvendu) ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, নির্বাচনের দুটি দফায় প্রায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ ক্যামেরা বন্ধ করে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করতে গিয়ে শুভেন্দু এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। তার সঙ্গে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক তোষণের অভিযোগ ও তিনি করেছেন। তিনি আরও বলেছেন সময় মতো জনসমক্ষে এই ঘটনার প্রমান তুলে ধরবেন।

শুভেন্দুর (Shuvendu) এই দাবি রাজ্যে নির্বাচনী স্বচ্ছতা ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। বিরোধী দলনেতা এবং নন্দীগ্রামের বিধায়ক, শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে তৃণমূলের সমালোচনা করতে গিয়ে দাবি করেছেন যে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দুটি দফায় প্রায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করা হয়েছিল।

   

তিনি (Shuvendu) এই ঘটনাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃত হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যার লক্ষ্য ছিল নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করা। তাঁর মতে, এই ক্যামেরাগুলি নির্বাচনী বুথে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা ভোটের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের পরাজয়ের পেছনে এই ধরনের কারচুপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শুভেন্দু (Shuvendu) দাবি করেন, নিশীথ প্রামাণিক ১৮ রাউন্ড পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন, কিন্তু ১৯ ও ২০ নম্বর রাউন্ডে ইভিএম বদল করা হয়, যার ফলে ফলাফল পাল্টে যায়। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বিজেপির এজেন্টরা ইভিএমের সঙ্গে প্রাপ্ত ভোটের অমিল নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁদের বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত সাত দফায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এবং ৪ জুন ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রায় ৯৬ কোটি ভোটারের মধ্যে ৬৪২ মিলিয়ন ভোটার এই নির্বাচনে অংশ নেন, যার মধ্যে ৩১২ মিলিয়ন ছিলেন মহিলা ভোটার। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরলেও, এবার তাদের জোট সরকার গঠন করতে হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন সাত দফায় অনুষ্ঠিত হয়, এবং রাজ্যের ৪২টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। শুভেন্দু অধিকারীর (Shuvendu) অভিযোগ এই প্রেক্ষিতে উঠে এসেছে, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে, তৃণমূল সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে তাদের পক্ষে ফলাফল নিশ্চিত করেছে।

শুভেন্দু অধিকারী (Shuvendu) পুলিশ এবং নির্বাচনী প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ বিজেপির এজেন্টদের প্রতিবাদ দমন করতে গ্রেফতার করেছে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তিনি আরও দাবি করেন যে, ক্যামেরা বন্ধ করার ঘটনা তৃণমূলের তোষণ রাজনীতির অংশ, যার মাধ্যমে তারা নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে।

Advertisements

তৃণমূলের প্রতিক্রিয়াতৃণমূল কংগ্রেস শুভেন্দুর (Shuvendu) এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের মুখপাত্ররা দাবি করেছেন যে, নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তারা শুভেন্দুর অভিযোগকে বিজেপির পরাজয়ের হতাশার ফল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তৃণমূল নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের কঠোর নজরদারি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের কারচুপি সম্ভব নয়।

নির্বাচন কমিশন এখনও শুভেন্দুর (Shuvendu) এই অভিযোগের বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে কমিশন জানিয়েছিল যে, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। শুভেন্দুর অভিযোগ কমিশনের এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছে, এবং এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

শুভেন্দু অধিকারীর (Shuvendu) এই অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিজেপি এই ঘটনাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, বিশেষ করে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। সামাজিক মাধ্যমে এই অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে, এবং অনেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

কূটনৈতিক যুদ্ধ! জঙ্গি হাফিজ ও মাসুদের বিনিময়ে পাকিস্তান কী চাইবে?

শুভেন্দু অধিকারীর (Shuvendu)দাবি যে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দুই দফায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ ক্যামেরা বন্ধ করে কারচুপি করা হয়েছে, তা রাজ্যের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। এই অভিযোগ সত্য হলে, এটি ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি গুরুতর হুমকি। নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের কাছে এখন দায়িত্ব রয়েছে এই অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা প্রকাশ করা। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মঞ্চে এই ঘটনা ভবিষ্যতের নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।