রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikari) নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মমতার বিরুদ্ধে নালিশ করেছেন। বাংলায় ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার নিয়ে রাজ্য রাজনীতির তরজা তুঙ্গে। গত বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের কর্মিসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপি দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের মতো বাংলার ভোটার তালিকায় ভূতুড়ে ভোটার ঢোকাচ্ছে। মমতা তার অভিযোগে ৯ জনের নামও পড়ে শোনান। মমতার এই অভিযোগের পর, শুক্রবার অর্থাৎ আজ শুভেন্দু (Subhendu Adhikari) মমতার বিরুদ্ধে নালিশ করেন।
শুভেন্দু দাবি করেছেন, মমতার দেওয়া ৯টি নামই ভুয়ো। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার পর জানা গেছে, এই ৯টি নাম নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ভুয়ো। এর পাশাপাশি, শুভেন্দু বায়োমেট্রিক ব্যবস্থায় ভোটের দাবি জানিয়েছেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য তিনি বলেন, ‘আধার এবং ভোটার কার্ডের সঙ্গে বায়োমেট্রিক মেশিন ব্যবহার করতে হবে।’
ভোটার তালিকায় ভূতুড়ে নাম ঢোকানোর অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজাসুজি বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি বাংলার ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা ও অনুপ্রবেশকারীদের নাম ঢোকাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এমন ১৬ লক্ষ ভুয়ো নাম রয়েছে বাংলার ভোটার তালিকায়।’ মমতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আনসারুল্লাহ সন্ত্রাসী সংগঠনের জঙ্গি শাদ শেখের নামও ভোটার তালিকায় ছিল। সে হরিহরপাড়ায় ভোট দিল কী করে?’ এই অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, ‘মমতা যে ৯টি নাম বলেছেন, তা গোটাটাই মিথ্যা।’
ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীদের নাম থাকার বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে শুভেন্দু বলেন, ‘বজবজে তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতির পরিবার বাংলাদেশে থাকে।’ এছাড়া, তিনি নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করে বলেন, ‘মমতা যে তথ্য দিয়েছেন তা ভুল। সিইও বলছে, তার তথ্য ভিত্তিহীন।’
এছাড়া, শুভেন্দু আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন, সেটা সস্তার রাজনীতি। তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, কারণ দিল্লিতে ঝাড়ু হেরে গেছে।’ তার মতে, সরস্বতী পুজোয় বাধা দিয়ে তিনি জিততে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘হিন্দুরা নিজেদের শক্তি দেখিয়েছে, আর মমতা তাঁর সস্তার রাজনীতির জন্য শুধু মিথ্যা কথা বলছেন।’
এবারে ভোট প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার জন্য শুভেন্দু বলেন, ‘আধার এবং ভোটার কার্ড যোগ করে বায়োমেট্রিক মেশিন ব্যবহার করলে ভোটের স্বচ্ছতা আসবে।’ তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে শুভেন্দু বলেন, ‘যেহেতু রেশন দোকানে এই ব্যবস্থা করা সম্ভব, তাহলে ভোট বুথে কেন নয়?’
বাংলায় ভোটার তালিকায় ভূয়ো নাম এবং অনুপ্রবেশকারীদের উপস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই বিষয়ে কার বক্তব্য সঠিক, সেটা নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন।