চেয়ার বিতর্কের ছায়ায় শমীকের সৌজন্য কৌশল, পুরনোদের জন্য বিশেষ সম্মান

কলকাতা: দলীয় কর্মসূচিতে চেয়ার না পাওয়া”-দিল্লি সফরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মাঝে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যেই ফের আলোড়ন বঙ্গ রাজনীতিতে। বিজেপির বর্ষীয়ান এই নেতা মুখ ফসকে যা…

Shamik cautious about old people

কলকাতা: দলীয় কর্মসূচিতে চেয়ার না পাওয়া”-দিল্লি সফরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মাঝে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যেই ফের আলোড়ন বঙ্গ রাজনীতিতে। বিজেপির বর্ষীয়ান এই নেতা মুখ ফসকে যা বললেন, তা এখন ঘুরছে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে। কে, কবে, কোথায় বসতে দেননি তাঁকে? মুখে না বললেও, ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। ফলে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সদ্য সরানো সুকান্ত মজুমদারের দিকেই জল্পনার তির।

Advertisements

এই পরিপ্রেক্ষিতেই উত্তরবঙ্গ সফরে বেরিয়ে রাজ্য বিজেপির নবনিযুক্ত সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের ‘রাজনৈতিক সৌজন্য’ কৌশল এখন নজর কাড়ছে। প্রথম বড় সফরেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হলে পুরনো ও অভিজ্ঞ নেতাদের সম্মান দিতে হবে। শুধু কথায় নয়, প্রয়োগেও দেখা যাচ্ছে সেই প্রবণতা।

বিজ্ঞাপন

পুরনোদের সামনে বসানোর নির্দেশ

সূত্রের খবর, শমীক জেলা নেতৃত্বকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন সভা বা বৈঠকে যেন অভিজ্ঞ ও প্রাক্তন নেতাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়, সামনের সারিতে বসার সুযোগ তৈরি হয়। সেই অনুযায়ী আমন্ত্রণ জানাতেও বলা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এটি নিছক সৌজন্য নয়, বরং এক সুসংগঠিত বার্তা-দলীয় শৃঙ্খলা ও শ্রদ্ধার ভারসাম্য বজায় রাখা তাঁর অগ্রাধিকার।

সফরে বাদ সুকান্তের গড় Shamik cautious about old people

শমীকের সফরে দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, মালদা-সব জেলা থাকলেও, তালিকায় নেই দক্ষিণ দিনাজপুর। কাকতালীয়ভাবে এখানকারই সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। একাংশ বলছে, “সফরের সূচিতে এই বাদ পড়াটা নিছকই পরিকল্পনাহীন, তা বলা কঠিন।”

ব্যবহারে বদলের ইঙ্গিত

প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহাকে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করানো, যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি দেবজিত সরকারকে ফের সামনে আনা—সবকিছুই শমীকের এক সুস্পষ্ট কৌশলেরই অংশ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। “পুরনোদের শুধুই সংবর্ধনা নয়, কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি,” বলছেন এক শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা।

আর দিলীপ ঘোষ?

যার মন্তব্য থেকে গোটা বিতর্কের সূত্রপাত, সেই দিলীপ ঘোষকে শমীক জমানায় ঠিক কী ভূমিকায় দেখা যাবে এখন সেটাই দেখার বিষয়। তবে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষকে প্রশমিত করতে শমীকের এই সৌজন্যমূলক রাজনীতি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত সভাপতি চান, “বিতর্ক নয়, বোঝাপড়ার রাজনীতি ফিরুক বিজেপির অন্দরমহলে।”

তার প্রাথমিক ইঙ্গিত মিলছে উত্তরবঙ্গ সফরের ধরনেই সঙ্কেত, যাঁদের হাত ধরে দল শুরুর দিনগুলোতে লড়েছিল, তাঁদের পাশ কাটিয়ে এগোনো নয়, তাঁদের সঙ্গেই পথ হাঁটবে বিজেপি।