বাংলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সতর্কতা

West Bengal weather alert: ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে একাধিক এলাকার উপর আছড়ে পড়তে চলেছে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা। এই বৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে বিভিন্ন…

Severe Thunderstorms and Hailstorm Alerts for West Bengal: February 18-20

West Bengal weather alert: ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে একাধিক এলাকার উপর আছড়ে পড়তে চলেছে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা। এই বৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ও ব্লকে বিশেষভাবে ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির আঘাত আসতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে বিশেষভাবে ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ১৯ ফেব্রুয়ারি ও ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৃষ্টি ও ঝড়ের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। ১৮ ফেব্রুয়ারিতে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা ২০-৪০% থাকবে, ১৯ ফেব্রুয়ারিতে তা বাড়বে ৪০-৬০%, এবং ২০ ফেব্রুয়ারি ৪৫-৬৫% ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টির প্রকৃতি হবে বিক্ষিপ্তভাবে, অর্থাৎ সবজায়গায় একসঙ্গে হবে না।

   

বিশেষভাবে যেসব অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি, সেগুলি হলো পশ্চিম মেদিনীপুর, কেশপুর, শালবনী, চন্দ্রকোনা, বালিচক, গড়বেতা, ঘাটাল, দাসপুর, ডেবরা, পিংলা, মেদিনীপুর সদর, কেসিয়ারি, নারায়ণগড়, বেলদা, ঝাড়গ্রাম, বীনপুর, শিলদা, গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম, জামবনি, নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল, হুগলি, গোঘাট, আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুরা, তারকেশ্বর, হরিপাল, জঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা, শ্রীরামপুর, সিঙ্গুর, ধনিয়াখালি, বলাগড়, পাণ্ডুয়া, পোলবা – দাদপুর, হাওড়া, উদয় নারায়নপুর, আমতা, জগৎবল্লভপুর, বাগনান, ডোমজুড়, পাঁচলা, উলুবেড়িয়া, বালি, হাওড়া সদর, শ্যামপুর, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, পাত্রসায়র, ইন্দাস, কোতুলপুর, জয়পুর, ওন্দা, তালডাংরা, সিমলাপাল, সারেঙ্গা, রাইপুর, রানীবাঁধ, খাতড়া, হীরবাধ, ইন্দপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হুরা, বলরামপুর, পুরুলিয়া, বরাবাজার, মানবাজার, হাতিরামপুর, পূর্ব বর্ধমান, মেমারি, বর্ধমান শহর, ভাতার, রায়না, খণ্ডঘোষ, জামালপুর, নদীয়া, কল্যানী, হরিনঘাটা, চাকদা, রানাঘাট, শান্তিপুর, উ ২৪ পরগনা, ব্যারাকপুর, আমডাঙা, বারাসত, হাবরা, দেগঙ্গা, হাড়োয়া, মিনাখা, সন্দেশখালি, বনগাঁ, গাইঘাটা, পূর্ব মেদিনীপুর, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুক, মাতঙ্গিনী, পটাশপুর, এগরা, মহিষাদল, দ ২৪ পরগনা, বজবজ, মহেশতলা, বিষ্ণুপুর, ফলতা, ডায়মন্ড হারবার, মগরাহাট, সোনারপুর।

এছাড়া, এই অঞ্চলের উপর বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি আছড়ে পড়ার পাশাপাশি বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসও রয়েছে। বৃষ্টির সময়কাল সর্বনিম্ন ৩০ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।

বৃষ্টি এবং ঝড়ের সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় দমকা হাওয়া বইবে, তবে কোথাও কোথাও এই হাওয়া সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় বইতে পারে, যা ঝড়ের আকার নিতে পারে। এতে এলাকাভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, বিশেষত কৃষি জমি ও ঘরবাড়ির উপর।

এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আবহাওয়া দপ্তর কিছু সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষ করে ঝড়বৃষ্টি চলাকালীন মানুষের জন্য কিছু পরামর্শ রয়েছে। খোলা মাঠে বা বৃক্ষের নিচে না দাঁড়াতে বলা হয়েছে, কারণ বজ্রপাতের কারণে প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া, যদি কোনো বাড়ির ছাদের ওপর বসে থাকেন, তবে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে, কাঁচা বাড়ি ও ঝুপড়ি ঘরের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যাতে তারা ঝড়ের সময় নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে পারেন। নদী ও পুকুরের ধারে থাকা বাসিন্দাদেরও সেভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, কারণ ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে জলস্তরের বৃদ্ধি ঘটতে পারে, যা বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া, বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে শিলাবৃষ্টি হতে পারে, সেগুলির কৃষকদের জন্যও সতর্কতা রয়েছে। কৃষিকাজের জন্য বাইরে বেরোনো বা পাতা ছিঁড়ে ফেলা বা শস্যের ওপর কোনো ভারী জিনিস রাখার ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে যে সকল সতর্কতা জারি করা হয়েছে তা প্রত্যেক জেলা ও ব্লকের জন্য আলাদা আলাদা করা হয়েছে। সুতরাং প্রত্যেক জেলার স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমন আবহাওয়া পরিস্থিতিতে একমাত্র সতর্কতা অবলম্বন করে এবং প্রস্তুতি নিয়ে চললে জনজীবনকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে।