মানালী দত্ত, বহরমপুর: গত দুদিনের অকাল বৃষ্টির (Cyclone dana) ফলে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গীর ইনাতপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে এক হাঁটু জল জমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যার শিকার হয়েছেন শিশুরা, প্রশিক্ষকরা এবং রাঁধুনিরা। পুরো এলাকা একেবারে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে, যা সেখানে আসা মানুষের জন্য চরম ভোগান্তির সৃষ্টি করছে। তারা জল ঠেলে এগিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
এটা প্রথমবারের ঘটনা নয়। বর্ষার মরসুমের বাইরে যে কোনো অল্প বৃষ্টিতে এই কেন্দ্র এবং এর আশপাশের এলাকা জলে তলিয়ে যায়। কিন্তু স্থানীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে এই সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই। তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কোলে করে কেন্দ্রের ভেতরে নিয়ে আসছেন, অথচ কেন্দ্রের ভেতরেও জল জমে রয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে যে কোনো মুহূর্তে শিশুদের জন্য বিপদ আসতে পারে। জলমগ্ন এলাকার মধ্যে বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ভেসে আসতে পারে, যা শিশুদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ ছাড়া, বর্জিত জল যা নিকাশি নালার মাধ্যমে প্রবাহিত হচ্ছে, সেই জলে নানা ধরনের অস্বাস্থ্যকর জীবাণু থাকতে পারে, যা রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
বছরের এই সময়ে সাধারণত বর্ষার বৃষ্টির কারণে কৃষির সুবিধা হয় এবং গরম থেকে কিছুটা আরাম মেলে। কিন্তু অকাল বৃষ্টির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রেও অকাল বৃষ্টির প্রভাব ক্ষতিকর। কৃষকরা তাদের ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ অতিরিক্ত জল ফসলের ক্ষতি করে।
শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবকরা অসন্তুষ্ট। তারা দাবি জানাচ্ছেন, অবিলম্বে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা যায়। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, অকাল বৃষ্টির কারণে তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
এছাড়া, বৃষ্টির পানি জমে থাকা কারণে স্কুলের কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। শিশুরা শিক্ষা কেন্দ্র না গিয়ে বাড়িতে থাকার জন্য বাধ্য হচ্ছে। ফলে তাদের শিক্ষার উপর প্রভাব পড়ছে, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
স্থানীয় নেতাদের কাছে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন অভিভাবকরা। তারা চান, যাতে কেন্দ্রের অবকাঠামোগত সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হয় এবং বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত বা স্থানীয় প্রশাসনকে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের নিরাপত্তা ও শিক্ষা দুইটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ জানাচ্ছেন, সরকারের প্রতি তাদের এই দাবিগুলো উপেক্ষিত হলে আগামীতে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।