আপাতত বাংলা ছাড়া দিলীপ ঘোষ, বিজেপি শাসিত বাংলাভাষী রাজ্যে সংগঠন চাঙ্গা করবেন

বাংলা ছাড়ছেন দিলীপ ঘোষ? বঙ্গ বিজেপির (BJP) অভ্যন্তরে এখন চালু কথা ‘দিলীপদার আম ও ছালা দুটোই গেছে’! লোকসভায় পরাজয় তিনি (Dilip Ghosh) মেনে নিতে পারছেন…

Dilip Ghosh

বাংলা ছাড়ছেন দিলীপ ঘোষ? বঙ্গ বিজেপির (BJP) অভ্যন্তরে এখন চালু কথা ‘দিলীপদার আম ও ছালা দুটোই গেছে’! লোকসভায় পরাজয় তিনি (Dilip Ghosh) মেনে নিতে পারছেন না। তিনি আপাতত বাংলা থেকে দূরে থাকবেন। বিশ্বস্ত সূত্রে Kolkata 24×7 জেনেছে, বাংলাভাষী অধ্যুষিত বিজেপি শাসিত একটি রাজ্যে দলীয় সংগঠনের দূর্বলতা ধরা পড়েছে। ‘সংঘ বনাম কমিউনিস্ট’ সংঘাতের আশু লক্ষণগুলি বিশ্লেষণ করে সাংগঠনিক ‘রোগ সারাতে’ দ্রুত সেই রাজ্যে নিজেদের তাবড় সংগঠক দিলীপ ঘোষকে পাঠাচ্ছে (RSS) রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ।

সংঘের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্যটির বিজেপি শাসিত সরকারে মন্ত্রী-নেতারা প্রায় কেউই বিজেপির নিজের লোক নন। সবাই প্রাক্তন কংগ্রেস। ভাড়া করা লোক দিয়ে বেশিদিন চলা অসম্ভব। সরকার পতনের সম্ভাবনা ক্রমে বাড়ছে। এক্ষেত্রে কড়া দাওয়াই দিতে পারেন এমন ‘চিকিৎসক’ হলেন পরীক্ষিত সৈনিক দিলীপ ঘোষ।

   

সোমবার কলকাতায় বিজেপির ধরণা মঞ্চ থেকেও রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ-খুন ইস্যুতে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁর গরম ভাষণ শুনেছেন বঙ্গ বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। তবে তিনি যে আপাতত বাংলায় থাকছেন না সে বিষয়ে দলের অভ্যন্তরেই চলছে গুঞ্জন। কোথায় যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ? জানা যাচ্ছে সাংগঠনিক দূর্বলতা কাটাতে দিলীপ ঘোষকে ত্রিপুরায় যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বঙ্গ বিজেপির কিছু নেতা জানিয়েছেন, দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠদের কাছে বারবার বলেছেন লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা ছিল চক্রান্ত। তিনি রাজ্যের দুই নেতার ভূমিকায় বিশেষ ক্ষুব্ধ। আপাতত তিনি ত্রিপুরা প্রবাসী।

বিজেপি ত্রিপুরা প্রদেশ সূত্রে খবর, একাধিক জেলায় সংগঠন দূর্বল। এই জেলাগুলিতে সাংগঠনিক বিষয় দেখবেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপির একাংশ নেতা স্বীকার করে নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হলেও কেন্দ্রে মোদীর সেই দাপট নেই। কেন্দ্রে সরকার দূর্বল হওয়ার প্রভাব পড়েছে ত্রিপুরায়। আরও পরপর নির্বাচনে হারলেও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বজায় রেখেছে বিরোধী দল সিপিআইএম।

ত্রিপুরায় ২০১৮ সালে ২৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়। সেই বছর বিজেপি ক্ষমতায় আসে। বাম জমানায় বিরোধী দল কংগ্রেসের সব নেতারা প্রথমে তৃ়ণমূল কংগ্রেস ও পরে বিজেপিতে যোগ দেন। দেশজুড়ে প্রবল মোদী হাওয়ার তোড়ে ত্রিপুরায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে সিপিআইএমের নেতৃত্বে বাম সরকার।

সংঘের রিপোর্টে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটে সিংহভাগ ভোটার বিজেপি সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ছিলেন তা প্রমা়নিত। তবে উপজাতি দল অন্তত এক ডজন আসনে বাম ভোট কেটে নেওয়ায় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ফেরেনি। ত্রিপুরা রাজ্য সিপিআইএম সূত্রে খবর, রাজ্যবাসী বু়ঝতে পারছেন বাম সরকারের গুরুত্ব। দলীয় সব শাখা সংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

ত্রিপুরায় বিজেপির সংগঠন চাঙ্গা করতে সংঘের তাবড় প্রচারক দিলীপ ঘোষকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুদূর উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরায়। বিজেপির ত্রিপুরার সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিত বলেছেন, “প্রবীণ নেতা দিলীপ ঘোষকে রাজ্যের পাঁচটি জেলার জন্য বিজেপির সদস্যপদ অভিযানের ইনচার্জ করা হয়েছে।” দলীয় সংগঠন দুর্বল এমন পাঁচটি জেলা সদর (গ্রামীণ), খোয়াই, ধলাই, উনাকোটি ও উত্তর ত্রিপুরা দেখবেন দিলীপ ঘোষ।

প্রদেশ বিজেপি সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা রাজ্যে বিজেপির সদস্যসংখ্যা ৭ লাখ করার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য সিপিআইএম সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, অন্দরে অন্দরে ভেঙে পড়ছে বিজেপি। ত্রিপুরাবাসী ফের বামফ্রন্টের পক্ষে আসবেন।