ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের (Humayun Kabir) নিরাপত্তা নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে এক নতুন অস্বস্তি। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর বুধবার দলের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘শোকজ’ (Show-Cause) করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, পুলিশ প্রশাসনও হুমায়ুন কবিরের অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী (Security) প্রত্যাহার (Withdrawn) করে নিয়েছে। যদিও এই নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে তিনি এখনো কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে ঘটনাটি যেন আরও জটিল হয়ে ওঠে, কারণ চলতি বছরের ১৯ মার্চ কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠক করেছিলেন হুমায়ুন কবির। ওই বৈঠকের পরই পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়। জানা গেছে, বৈঠক চলাকালীন মুর্শিদাবাদ জেলার কয়েকজন জনপ্রতিনিধির অতিরিক্ত নিরাপত্তা পাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর প্রশাসন থেকে পদক্ষেপ নিয়ে হুমায়ুন কবিরের জন্য একজন এএসআই সহ পাঁচজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী এবং একটি এসকর্ট গাড়ি বরাদ্দ করা হয়।
তবে ১৬ নভেম্বর হুমায়ুন কবির পুলিশের কাজ নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন, যা তাঁর নিরাপত্তার বাহিনীর সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আসে। এর পরেই তাঁর সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ করা অতিরিক্ত বাহিনীর একজন এএসআই এবং দুই কনস্টেবলকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং এসকর্ট গাড়িও প্রত্যাহার করা হয়।
এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, “এই বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বর্তমানে আমার সঙ্গে দুজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। কেন আমার নিরাপত্তা বাহিনী কমানো হয়েছে, তা প্রশাসন জানাতে পারে।”
একই সঙ্গে, দলের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘শোকজ’ করার খবরও উঠে এসেছে। হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, “সংবাদমাধ্যম থেকে আমি জানতে পারছি যে আমাকে শোকজ করা হয়েছে, তবে আমি এখনো কোনো চিঠি পাইনি। যদি চিঠি পাই, তবে তার উত্তর দেব।”
এখন প্রশ্ন উঠছে, হুমায়ুন কবিরের নিরাপত্তা প্রত্যাহার এবং ‘শোকজ’ পদক্ষেপের পর, দল কী পদক্ষেপ নেবে এবং বিধায়ক তাঁর অবস্থান কীভাবে স্পষ্ট করবেন। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, জেলার যে ব্যক্তিরা পুলিশ নিরাপত্তা পান, তাঁদের নিরাপত্তার বাহিনীর বিষয়টি মাঝেমধ্যে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুনঃমূল্যায়ন করা হয়, এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে, এবং দেখার বিষয় হবে যে এই পরিস্থিতি কিভাবে এগিয়ে যায়।