অসমে (Assam) সম্প্রতি একটি বড় জঙ্গি কার্যকলাপের রহস্য উন্মোচন করেছে সেই রাজ্যর পুলিশ। কোকড়াঝাড় জেলার একটি গোপন স্থানে বাংলাদেশি জেএমবি (JMB) জঙ্গিরা একটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরির কাজ করছিল। এসটিএফ (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) এর অভিযানে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা গোটা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ জানায়, কোকড়াঝাড়ের এই গোপন ঘাঁটিতে জঙ্গিরা নানা ধরনের বিস্ফোরক উপকরণ তৈরি করছিল, এবং সেই কাজ সুতোর কাজ, টোটো চালক বা কারখানার শ্রমিকের কাজের আড়ালে চলছিল।
গঙ্গাসাগরকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা, দাবি গোয়েন্দাদের
এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জেএমবি এবং অন্যান্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলির কার্যকলাপের বিষয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। পুলিশের দাবি, বাংলাদেশ থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে বাংলাদেশি জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশ করে। এই জঙ্গিরা স্থানীয় জনগণের সাথে মিশে এবং বিভিন্ন রকমের শ্রমিকের কাজ করে তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল আইইডি তৈরির পাশাপাশি, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা।
এসটিএফ জানায়, এই জঙ্গিরা মূলত অসমের সীমান্তবর্তী এলাকা ব্যবহার করে ভারতে প্রবেশ করছিল। গোপন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, যে সব শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল, তারা ছিলেন এই জঙ্গি কার্যকলাপের অন্যতম অংশ। কিছু শ্রমিক যে জঙ্গিদের সহযোগী ছিল, তাদের হাত থেকেই এই বিস্ফোরক তৈরির কাজ হচ্ছিল। পুলিশের ভাষায়, এসব জঙ্গি মূলত এলাকার শ্রমিকদের পরিচয়ে নিজেদের আড়াল করত, যাতে তাদের কার্যকলাপ সহজে চিহ্নিত না করা যায়।
মৌলবাদীদের নিশানায় হিন্দু দম্পতি, আক্রান্ত বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা
অন্যদিকে, এই জঙ্গিদের মূল লক্ষ্য ছিল শুধু বিস্ফোরক তৈরি নয়, বরং তাদের কাছে থাকা অস্ত্রশস্ত্র এবং বিপজ্জনক সামগ্রী দ্বারা বৃহত্তর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভারতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো। অসম পুলিশের এসটিএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের জঙ্গি কার্যকলাপ যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য রাজ্য পুলিশ খুব দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিশেষত, বাংলাদেশি জঙ্গিদের কার্যকলাপের পাশাপাশি তাদের সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা দলের কার্যক্রমও এই অঞ্চলে চলছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই গোটা পরিস্থিতি রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং মানবিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অসমের পুলিশ প্রশাসন গোপনে চলা এই জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। তাদের লক্ষ্য হল, যাতে এসব জঙ্গিরা দেশে যাতে আর কোনো ধরনের হামলা চালাতে না পারে এবং আগাম সতর্কতা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
জওয়ান ভরতি পাক সেনার বাসে বিস্ফোরণ, মৃত বহু
অসমের পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের আশঙ্কা বেড়ে গেছে, বিশেষত সীমান্তবর্তী এলাকায়। এসব ঘটনার ফলে, অসম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ এবং পুলিশ উভয়ই নিজেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন কোনো বিপজ্জনক কার্যকলাপ যেন আর না ঘটে।