শিয়ালদহ: যাত্রী সুরক্ষা ও ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল শিয়ালদহ ডিভিশন (Sealdah Division)। এবার ‘ভেন্ডর-মুক্ত’ রেলস্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হল শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত বিধাননগর রেলস্টেশনকে। এর পাশাপাশি যাত্রী সুবিধার্থে সন্ধ্যায় শিয়ালদহ মেন লাইনে চালু করা হচ্ছে একটি নতুন স্পেশাল লোকাল ট্রেন।
রেল সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৭:২৫ (১৯:২৫) মিনিটে বিধাননগর স্টেশন থেকে ছাড়বে এই বিশেষ ট্রেন, যা পৌঁছবে কল্যাণীতে রাত ৮:৩৬ (২০:৩৬) মিনিটে। কল্যাণী থেকে পুনরায় ছাড়বে রাত ৮:৫২ (২০:৫২) মিনিটে এবং গন্তব্য শিয়ালদহ পৌঁছবে রাত ১০:১৯ (২২:১৯) মিনিটে।
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল—
যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
স্টেশনে চলাচল সুষ্ঠু রাখা
যানজট নিয়ন্ত্রণ করা
স্টেশন চত্বরকে পরিচ্ছন্ন ও সচল রাখা
প্রায় প্রতিদিন ১.৭ লক্ষ যাত্রী এই স্টেশন ব্যবহার করেন। সকাল ও সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে যাত্রীসংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষেরও বেশি। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যাতায়াতের অভিজ্ঞতা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, “আমাদের উদ্দেশ্য কেবল পরিষেবা দেওয়া নয়, বরং যাত্রীদের নিরাপদ, সুপরিচালিত এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় অভিজ্ঞতা দেওয়া। এই পরিকল্পনা সেই বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণের অংশ।”
রেল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বিধাননগর স্টেশন থেকে অননুমোদিত হকারদের সরানোর কাজ শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম বা আশেপাশের এলাকায় যারা অনুমতি ছাড়াই বিক্রিবাটার করছিলেন, তাদের অপসারণ করা হচ্ছে। রেল জানিয়েছে, শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত হকারদের নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করে বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হবে।
এই পরিকল্পনার আওতায় স্টেশনের চারপাশে পরিচ্ছন্নতা, শৃঙ্খলা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। এটি স্টেশনের সৌন্দর্যায়নের অংশ হিসেবেও ধরা হচ্ছে। একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা, অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী এবং রেল পুলিশের তৎপরতাও বাড়ানো হবে বলে সূত্রের খবর।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে কলকাতা ও আশেপাশের আরও কিছু ব্যস্ত রেলস্টেশনে এই ধরনের ‘ভেন্ডর-মুক্ত’ নীতি চালু করা হবে। সেইসঙ্গে বিশেষ ট্রেন চালানো ও প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যাত্রীদের যাতায়াতের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করা হবে।
যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী, এই পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসনীয়। তারা মনে করছেন, স্টেশনের পরিবেশ যেমন নিরাপদ ও পরিষ্কার হবে, তেমনই যাত্রীদের চাপও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। যাত্রীদের একাংশ বলছেন, যদি এই পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন হয়, তবে এটি রেলের পক্ষ থেকে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
সর্বোপরি, শিয়ালদহ ডিভিশনের এই উদ্যোগ শহরের রেল পরিষেবার উন্নয়নের এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে বলেই মনে করছেন রেল যাত্রী ও বিশেষজ্ঞরা।