আনন্দের মুখে ঝামা, বড় ইচ্ছেপূরণ সায়ন্তিকা-রেয়াতের

অবশেষে বিধায়ক পদে শপথ নিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। বিধানসভা বনাম রাজ্যপালের নজিরবিহীন সংঘাতের মধ্যেই শেষপর্যন্ত স্পিকারের কাছেই শপথ বাক্য পাঠ করেন বরাহনগর…

Sayantika Banerjee and Reyat Hossain Sarkar took oath as MLAs by Speaker Biman Byanerjee , স্পিকার বিমান ব্য়ানার্জীর কাছেই বিধায়ক পদে শপথ নিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার

অবশেষে বিধায়ক পদে শপথ নিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। বিধানসভা বনাম রাজ্যপালের নজিরবিহীন সংঘাতের মধ্যেই শেষপর্যন্ত স্পিকারের কাছেই শপথ বাক্য পাঠ করেন বরাহনগর ও ভগবানগোলার বিধায়করা।

রাজভবনের তরফে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডেপুটি স্পিকার অশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সায়ন্তিকা ও রেয়াতকে বিধায়ক পদে শপথ বাক্য পাঠ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুসারে শুক্রবার বিশেষ অধিবেশনে বিএ কমিটির বৈঠক শেষে ডেপুটি স্পিকারকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর নির্দেশ দেন স্পিকার। তবে ডেপুটি স্পিকার শপথ বাক্য পাঠ করাতে অস্বীকার করেন। অশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে সভায় স্পিকার উপস্থিত আছেন সেখানে আমি শপথ নেওয়ার ধৃষ্টতা বা অসৌজন্য দেখাতে পারব না। আমি অনুরোধ করি আপনি শপথ বাক্য পাঠ করান।’

   

এরপরই বিধানসভায় উপস্থিত সকলের সম্মতিতে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারকে শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাতেই শপথ বাক্য পাঠ করেন দু’জনে। সেই সময় বিধানসভায় ওঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। তবে, এ দিন বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন বয়কট করে বিজেপি।

দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ অসম্পূর্ণ, মানলেন মমতাও, জানালেন কবে গড়াবে রথের চাকা

গত ৪ জুন, লোকসভার পাশাপাশি রাজ্যের দুই বিধানসভা কেন্দ্র বরাহনগর ও ভগবানগোলার উপ-নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হয়। বরাহনগর কেন্দ্রে জয়ী হন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলায় রেয়াত হোসেন সরকার। কিন্তু মাস গড়ালেএ তাঁরা বিধায়ক পদে শপথ নিতে পারেননি। কারণ, বিধানসভা ও রাজ্যপালের মধ্যে নজিরবিহীন সংঘাত।

শুরুতে রাজভবনের তরফে সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে চিঠি পাঠানো হয়। সেই চিঠিতে, রাজভবনে গিয়ে তাঁদের শপথ নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল বলে খবর। তবে সেই চিঠি রেয়াত হোসেন সরকার পাননি বলেই দাবি করেছিলেন এবং রাজভবনে গিয়ে শপথবাক্য পাঠে আপত্তি করেন সায়ন্তিকা। পরিবর্তে উভয়ই রাজ্য বিধানসভায় শপথ গ্রহণের আবেদন জানিয়ে রাজ্যপালের কাছে অনুমতির আবেদন করেছিলেন তৃণমূলের দুই জয়ী প্রার্থী। তবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাতে রাজি হননি। রাজ্যপালকে রাজভবনে এসে শপথ বাক্য পাঠ করানোর অনুরোধ করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু তাতে জট কাটেনি।

রথযাত্রায় বাম্পার সুযোগ, ভারতীয় রেলের জোড়া স্পেশাল ট্রেন! কোথা থেকে কোথায় যাবে?

শেষে বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার নোটিসে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের ডাকেন স্পিকার। এ দিন বিশেষ অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘১৮৮ ধারা অনুযায়ী জয়ী প্রত্যেককে শপথ নিতে হয়। এটাই রীতি যে স্পিকারের সামনে বিধানসভায় শপথ নেন বিধায়করা। কিন্তু এই দুটজনের ক্ষেত্রে দেখা গেল রাজভবনে বারবার জানানোর পরও রাজভবন কোনও পদক্ষেপ করলেন না। আমি এখানে অসহায়। শপথ রীতি অনুযায়ী বিধানসভায় হওয়ার কথা। এই দু’জনও সেটাই জানান রাজ্যপালকে।’

স্পিকারের সংযোজন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে রাজ্যপাল এই দুই বিধায়কের আর্জি শুনে কোনও সিদ্ধান্তই এতদিন ধরে জানাননি। রাজনীতি আর আইন এই বিধানসভায় একসঙ্গে প্রতিফলিত হয়। জনগণের প্রতিনিধি হয়ে সবাই এখানে আসেন। ১৮৮ ধারা অনুযায়ী স্পিকার যেভাবে বলবেন সেভাবে বিধানসভা চলাকালীন শপথ নেওয়ার বিধি আছে। সেখানে স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমার অফিস এর মধ্যে একটা চিঠি পেয়েছে। যেখানে ডেপুটি স্পিকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শপথ পাঠের। সেটা এসেছে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২২ মিনিটে। আমি তাঁকে বলেছিলাম শপথ বাক্য পাঠ করাতে। কিন্তু তিনি আমাকেই বলেন সেই কাজ করতে। তাই আমিই ওই দু’জনকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছি।”