সরস্বতী পুজো(Saraswati Pujo) মানেই ছোট থেকে বড়ো সবার কাছে আনন্দের একটি দিন। প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী উদযাপিত হয় এবং এই দিনে হিন্দু ধর্মে বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী মা সরস্বতীর আরাধনা করা হয়। তবে এবছর এই তিথি নিয়েই নানান বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে। বিভিন্ন পুরোহিতেরও বিভিন্ন মতামত এই তিথি নিয়ে।
তবে, পঞ্জিকা অনুযায়ী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা একাংশের মতে, পঞ্চমী তিথি ২ ফেব্রুয়ারি রবিবারই দিনভর থাকছে এবং সোমবার সকালেই ছেড়ে যাচ্ছে। ফলে পুজো করতে হলে রবিবারই করা উচিত। আবার বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, তারা এ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলার পরই সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। তবে সরকারি ক্যালেন্ডারে কিন্তু রবিবারকেই সরস্বতী পুজো হিসাবে দেখানো হয়েছে। এদিকে আবার বিভিন্ন পঞ্জিকা নানান ধরনের মতামত দিচ্ছে।
দৃক পঞ্জিকা অনুযায়ী, বাংলার ১৯ মাঘ অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ এ পড়ছে বসন্ত পঞ্চমী। সেদিন সকাল ৯ টা ১৪ মিনিটে তিথি শুরু হবে। আর তিথি শেষ হবে ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৬ টা ৫২ মিনিটে।
অন্যদিকে, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুযায়ী, পঞ্চমী তিথি শুরু হবে, ১৯ মাঘ, রবিবার। ইংরেজিতে ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখ। সেদিন সকাল ৯ টা ১৬ মিনিটে শুরু হবে পুজো। পঞ্চমী তিথি শেষ হবে ৩ ফেব্রুয়ারি, সোমবার। সোমবার, সকাল ৬ টা ৫৩ মিনিটে এই তিথি শেষ হবে।
আবার, গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা অনুযায়ী, পঞ্চমী তিথি ১৯ মাঘ, রবিবার শুরু হবে। ইংরেজি, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখ পড়ছে সেদিন। বসন্ত পঞ্চমীর তিথি বেলা ১২ টা ১২ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে শুরু হবে। ২০ মাঘ, সোমবার, অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সালে তিথি সকাল ৯ টা ৫৭ মিনিটে ৩৮ সেকেন্ডে শেষ হবে।
বেণীমাধব শীলের গার্হ্যস্থ পঞ্জিকা অনুযায়ী, রবিবার ১৯ মাঘ পড়ছে পঞ্চমী তিথি। সেদিন অর্থাৎ ২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সালে রবিবার এই তিথি পড়ছে ১২ টা ৩৪ মিনিটে। পঞ্চমী তিথি শেষ হবে ২০ মাঘ, সোমবার। সেদিন ইংরেজি, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। সোমবার সকাল ৯ টা ৫৯ মিনিটে শেষ হবে তিথি।
যেহেতু রবিবার সারাদিন পঞ্চমী তিথি আছে তাই বেশিরভাগ জায়গাতেই রবিবার পুজো হবে। তবে, সোমবার বিভিন্ন স্কুল সরস্বতী পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে, ছাত্র-ছাত্রীদের ভোরবেলা স্কুলে পৌঁছাতে হবে কারণ অনেকেই স্কুলে পুষ্পাজ্ঞলি দেয়।
বোলপুর তারাশঙ্কর বিদ্যাপীঠে সোমবার পুজো হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিত্যানন্দ বারুই বলছেন, ‘‘আমাদের স্কুলে যিনি পুজো করবেন, রামকৃষ্ণ মিশনের সংস্কৃত পণ্ডিত, তিনি সূর্যোদয়ের তিথিকেই মান্যতা দিয়েছেন। বলেছেন তিথি থাকতে থাকতেই সংকল্প করতে হবে।’’ অন্যদিকে রবিবার পুজো করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিকে টিপিপি প্রবীর সেনগুপ্ত বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মামুন হাসান বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের যে শিক্ষক সরস্বতী পুজোর দায়িত্বে তাঁর মতামত নিয়েই এই সিদ্ধান্ত।’’
অনেক বিদ্যালয় এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি, যেমন- মহম্মদবাজারের কেদারপুর সিবি উচ্চবিদ্যালয়, পটেলনগর অতুলভাবিনী নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। ওই দু’টি স্কুলের প্রধানশিক্ষক হরিদাস দাস ও ভবানী দত্ত বলছেন, ‘‘দু’দিন তিথি থাকায় এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। পুরোহিতের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’