আরএসএস (RSS) প্রধান মোহন ভাগবত সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানে একটি জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে তিনি তার সংগঠন তথা সংঘের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সংঘের কাজ একটাই, তা হল সমাজকে সংগঠিত করা এবং সংগঠিত রাখা।’ মোহন ভাগবতের মতে, সংঘের মূল উদ্দেশ্য হল এমন মানুষের তৈরি করা যারা সমাজের জন্য কাজ করতে সক্ষম। এই কাজকে বাস্তবায়িত করার জন্য সংঘ স্ময়ং সেবকদের তৈরি করে।
তিনি আরও জানান, ‘এটা এমন একটা কাজ যা বহু শতাব্দী পরে ভারতে শুরু হয়েছে। তথাগত বুদ্ধের পর প্রথম এ ধরনের কাজ হচ্ছে ভারতবর্ষে।’ মোহন ভাগবত বলেন, ‘এগুলোর জন্য সময় লাগে বুঝতে। তবে যারা এ কাজের বিরোধিতা করেন, তাদের নিজেদের স্বার্থ জড়িত থাকে। তারা অপপ্রচার করেন। কিন্তু আমি তাদের বলব, যদি সংঘকে বুঝতে চান, সংঘের মধ্যে আসুন।’
সংঘের কাজের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সংঘে আসতে হলে কাউকে কোনো টাকা দিতে হয় না, কোনও আনুষ্ঠানিক সদস্যপদও লাগে না। কেউ যদি চান, তারা সংঘের অংশ হতে পারেন। যদি না চান, চলে যেতে পারেন। সংঘের কাজ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী। এখানে কিছু পাওয়ার বিষয় নেই, শুধুমাত্র দানের মনোভাব থাকতে হবে।’
মোহন ভাগবত তার বক্তৃতায় হাতি ও দৃষ্টিহীন মানুষের প্রচলিত গল্পের উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, ‘অনেকেই দূর থেকে সংঘকে দেখতে পান, কিন্তু তারা ভুল বুঝতে পারেন। তাই আমি বলব, সংঘের ভেতরে আসুন, কাজ করুন, তখন বুঝতে পারবেন সংগঠনটি কেমন।’
আরএসএস প্রধান আরও বলেন, ‘সংঘ দেশের ৭০,০০০ শাখায় ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা বলি, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংগঠন। কিন্তু আমরা কেন আরও বৃদ্ধি করতে চাইছি? সেটা আমাদের জন্য নয়। যদি আমাদের নাম না থাকে, তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু যদি সমাজ একত্রিত হয়, তাহলে সেটা দেশ ও বিশ্বে উপকারী হবে।’
মোহন ভাগবত ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, ‘ভারত সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। আমাদের শত্রু হতে চাইলেও, আমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই। এটি আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং বর্তমানের মূল লক্ষ্য।’
মোহন ভাগবত যে বার্তা দিলেন, তা হচ্ছে সংঘের কাজ কোনো স্বার্থের ভিত্তিতে নয়, এটি সম্পূর্ণ আত্মত্যাগের ভিত্তিতে। তিনি সবাইকে আহ্বান করেন সংঘের মূল উদ্দেশ্য বুঝতে এবং সমাজের কল্যাণে কাজ করতে।