পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার মঙ্গলবার দাবি করেছেন যে, আর.জি. কর মেডিকেল (RG Kar Case) কলেজ ও হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যদি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (CBI) প্রথম দিন থেকে তদন্তের দায়িত্ব পেত, তবে এর ফলাফল ভিন্ন হতো।
তিনি আরও বলেন, যেসব মামলা প্রথম থেকেই সিবিআইয়ের (RG Kar Case) হাতে থাকে, সেগুলির তদন্তে সাফল্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। তবে, যেসব মামলা রাজ্য পুলিশের হাত থেকে পরে সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়, সেগুলির সাফল্যের হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এই মন্তব্য তিনি দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে সাম্প্রতিক গণধর্ষণ মামলার প্রেক্ষাপটে করেছেন, যা পশ্চিমবঙ্গে নারী নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
গত বছর আর.জি. কর মেডিকেল কলেজে (R G Kar Case)একজন জুনিয়র ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এই মামলায় কলকাতা পুলিশ প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করে, এবং পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
সুকান্ত মজুমদারের মতে, প্রাথমিক তদন্তে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক এবং প্রমাণ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল, যা মামলার অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, “আর.জি. কর মামলায় যদি প্রথম দিন থেকে সিবিআই তদন্ত করত, তবে ন্যায়বিচার দ্রুত এবং সঠিকভাবে পাওয়া যেত।
প্রমাণ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকত, এবং অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তি দেওয়া সম্ভব হতো।”মজুমদার আরও জানান, সিবিআইয়ের (RG Kar Case) হাতে যেসব মামলা শুরু থেকেই থাকে, সেগুলিতে তদন্তের স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা বেশি থাকে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, “যেসব মামলা রাজ্য পুলিশের হাত থেকে পরে সিবিআইয়ের কাছে যায়, সেখানে প্রায়ই প্রমাণ নষ্ট হয়ে যায় বা তদন্তে বিলম্ব হয়। এর ফলে ন্যায়বিচার পেতে দেরি হয়, এবং কখনও কখনও অপরাধীরা শাস্তি এড়িয়ে যায়।”
তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপর অভিযোগ তুলে বলেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, এবং গুরুতর অপরাধের মামলাগুলি সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা উচিত।দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গণধর্ষণ মামলার প্রসঙ্গে মজুমদার বলেন, “এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে নারীদের নিরাপত্তার ব্যর্থতার আরেকটি উদাহরণ।
কলেজের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (RG Kar Case) যদি এমন ঘটনা ঘটে, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?” তিনি দাবি করেন, এই মামলাটিও সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া উচিত, যাতে তদন্ত নিরপেক্ষভাবে এবং দ্রুত সম্পন্ন হয়। তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল সরকারের অধীনে পুলিশ প্রশাসন রাজনৈতিক চাপে কাজ করে, যা তদন্তের গুণগত মানের উপর প্রভাব ফেলে।”এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) নেতৃত্ব তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, দল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। তবে, মজুমদারের মতে, তৃণমূলের এই বক্তব্য কেবল রাজনৈতিক প্রচার, এবং রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে এই ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আর.জি. কর মামলায় তৃণমূল সরকারের প্রাথমিক তদন্তের ব্যর্থতা সবাই দেখেছে।
এখন দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজের ঘটনায়ও (RG Kar Case) একই ধরনের ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে।”জাতীয় মহিলা কমিশন (এনসিডব্লিউ) এই ঘটনার স্বতঃপ্রণোদিত সংজ্ঞান নিয়ে কলকাতা পুলিশকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে, বিজেপি জাতীয় সভাপতি জে. পি. নাড্ডা একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, যারা দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজের ঘটনার তদন্ত করবে।
মজুমদার জানান, বিজেপি (RG Kar Case) এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পাশে রয়েছে এবং ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।আর.জি. কর মামলায় সিবিআই বর্তমানে তদন্ত চালাচ্ছে, এবং প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, মামলার অগ্রগতি নিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
মজুমদারের মতে, (RG Kar Case) প্রাথমিক তদন্তে কলকাতা পুলিশের ব্যর্থতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট হয়েছে, যা সিবিআইয়ের তদন্তে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, “সিবিআই যদি শুরু থেকে তদন্ত করত, তবে আমরা আরও দ্রুত ন্যায়বিচার পেতাম।”এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা এবং নারী নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
মজুমদার বলেন, (RG Kar Case) “রাজ্যে নারীদের নিরাপত্তা বিপন্ন। আর.জি. কর, দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজ—এই ঘটনাগুলি তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ।” তিনি দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে।তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
‘ছোট্ট ঘটনা…’, কসবা-কাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত? মানস মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়
তবে, মজুমদারের (RG Kar Case) মন্তব্য এই বিতর্ককে আরও উত্তপ্ত করেছে। তিনি বলেন, “তৃণমূল সরকারের অধীনে পুলিশের তদন্তে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয়, যা ন্যায়বিচারের পথে বাধা। সিবিআইয়ের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার হাতে তদন্ত দেওয়া উচিত।” এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, এবং নাগরিক সমাজও ন্যায়বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে।