নদীয়া, কৃষ্ণনগর: কৃষ্ণনগরের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় (Krishnanagar Case) প্রধান অভিযুক্ত রাহুল বোসকে (Rahul Bose)আরও ৫ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিশ অভিযুক্তের পুনরায় পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানালে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে। আদালতের নির্দেশের পরই তদন্তে জোর দেয় পুলিশ এবং শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিত কুমার জানান, অভিযুক্তকে নিয়ে তদন্তের কাজ আরও এগোনোর জন্য তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ফরেনসিক দল, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্ট এবং কেমিক্যাল এক্সপার্ট ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, এবং পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টের ইঙ্গিত
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে “এন্টিমর্টেম বার্ন” শব্দটির উল্লেখ থাকলেও, মৃত ব্যক্তির সঠিক মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত হয়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, রিপোর্টে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি রয়েছে। সমস্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর আসল কারণ প্রকাশ্যে আসবে। এর পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্য এবং তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি পোড়া বোতলও রয়েছে।
পোড়া বোতলের ফরেনসিক পরীক্ষা
পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পোড়া বোতলটি উদ্ধার করে পুলিশ। মিত কুমার জানান, সেই বোতলটি ইতিমধ্যে সিজ করা হয়েছে এবং ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বোতলের রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝা যাবে, ঘটনায় অগ্নিসংযোগের কোন প্রমাণ রয়েছে কিনা। পুলিশের মতে, এটি ঘটনার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ পিকেট সরানোর কারণ
এদিকে, পুলিশ পিকেট সরানোর বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ঘটনাস্থল থেকে ইতিমধ্যে সমস্ত তথ্য এবং নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে এখন আর সেখান থেকে প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পুলিশি পাহারার প্রয়োজন নেই। তিনি আরও জানান, তদন্তের স্বার্থে যতটুকু সম্ভব নিরাপত্তার ব্যবস্থা বজায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।
তদন্তের অগ্রগতি
অভিযুক্তের পুনরায় পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত রাহুল বোস কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, যা তদন্তের গতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের ধারণা, ফরেনসিক রিপোর্ট এবং অভিযুক্তের জিজ্ঞাসাবাদের ফলাফল একসাথে মিলিয়ে পুরো ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন সম্ভব হবে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
এখনও পর্যন্ত পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে নেওয়া সমস্ত পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে পরিচালিত হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে চাঞ্চল্য থাকলেও, পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ এবং সতর্ক তদন্ত প্রক্রিয়া এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনেছে।
তবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাচ্ছে, তদন্তের কাজে কোনও রকম ফাঁক রাখতে চায় না পুলিশ।