বিজেপি বুথ সভাপতি’র বাড়িতে হামলা’কে ঘিরে আবারও কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলো পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) ভূপতিনগর। অভিযোগ উঠেছে শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত গ্রেফতার দাবিতে থানায় ঘেরাও ও পথ অবরোধ শামিল হন শতাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। পুলিশ লাঠিচার্চ করে হটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বরা। ঘটনাটি ঘটছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভূপতিনগর থানার বরোজ এলাকায়। এই ঘটনায় বিজেপির একজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠক সহ পাঁচজন পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হন। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের সরগরম ভূপতিনগরের বরোজ এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্ত যুবক অলোক প্রধান। তার বাড়ী ভূপতিনগরের বাসিন্দা। বুধবার ধৃতকে কাঁথি আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের উপর হামলা, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গ্রেফতার অলোক প্রামানিক বিজেপি সর্মথক বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভূপতিনগর থানার বরোজ এলাকায় বিজেপি মণ্ডলের সভাপতি গৌরহরি মালের বাড়ীর হামলার অভিযোগ উঠে। হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা বলে বিজেপি অভিযোগ। তার প্রতিবাদে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা ভূপতিনগর থানার সামনে অবরোধ ও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় পুলিশের । তখনই বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠে খোদ থানার ওসি গোপাল পাঠক সহ পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে। পাল্টা পুলিশের পক্ষ থেকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা পুলিশ কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠে। এই ঘটনায় থানার ওসি গোপাল পাঠক সহ ৫ জন পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হন। পাল্টা বিজেপির কয়েকজন কর্মী সমর্থক জখম হন বলে বিজেপি অভিযোগ।
কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা বলেন ” ভূপতিনগর থানার ওসি সহ পাঁচ জন পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। এখনোও পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে জোরদার তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে “।
পুলিশের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ভগবানপুরের বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ মাইতি। তিনি বলেন ” ভূপতিনগর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক গোপাল পাঠক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সহ মণ্ডলের সদস্যরা বিজেপির বুথ সভাপতি গৌরহরি মালের বাড়ীতে হামলার সন্ত্রাসে প্রতিবাদ জানাতে থানায় হাজির হয়েছিলেন। পুলিশের ভূমিকা অদ্ভুত দেখলাম। থানায় ওসি গোপাল পাঠক বিজেপির নেতৃত্বদের উপর হাত চালাচ্ছেন। পুলিশ একেবারে গুণ্ডামির ভূমিকায় দেখলাম “।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাপতির তথা পটাশপুরের বিধায়ক তৃণমূল নেতা উত্তম বারিক বলেন ” তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি ভাজাচাউলি ও বরোজ মধ্যস্থলে বাড়ী, পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। বিজেপি কিছু নেতৃত্ব অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি’র নেতৃত্বে ৫০ জন কর্মী সমর্থক বাজারের উপর মিছিল করে থানার সামনে বসে পড়ে। ওসি জানতে চান, ৫-৭ জন নেতৃত্ব এসে কথা বলুন। তারপরে বিজেপি পাঁচ -সাতজন নেতৃত্ব ওসির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। বিজেপির হার্মারদা সারা বাংলাতে অশান্ত করার চেষ্টা করছে “।