মিলন পণ্ডা, চণ্ডীপুর: জগদ্ধাত্রী পুজোর আগেই শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে। বিরোধী দলনেতার ছবি ছেঁড়া নিয়ে রাজনৈতিক পারদ চড়েছে এলাকাজুড়ে। বিজেপির পক্ষ থেকে সরাসরি অভিযোগ তোলা হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতিকারীদের দিকে, যদিও অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
ঘটনাটি ঘটেছে চণ্ডীপুর বিধানসভার ভগবানপুর ১ ব্লকের বিবিষণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। জানা গিয়েছে, বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত জগদ্ধাত্রী পুজোয় বুধবার সন্ধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর আগমন নির্ধারিত ছিল। তাঁর সফর উপলক্ষে গোটা গ্রামজুড়ে শুভেন্দুর ছবি, ব্যানার ও ফেস্টুনে সেজে উঠেছিল এলাকা। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে কে বা কারা সেই পোস্টার ও ফ্লেক্স ছিঁড়ে ফেলে বলে অভিযোগ।
বুধবার সকালে ঘটনাটি নজরে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, “তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই কাজ করেছে। শুভেন্দুর জনপ্রিয়তা আটকানোর জন্য নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে।”
বিজেপি রাজ্য নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা এদিন বলেন, “এটা শুধু পোস্টার ছেঁড়া নয়, এটা গণতন্ত্রের অপমান। শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেখে যদি ভয় পান, তাহলে মানুষ যখন তাঁর পাশে দাঁড়াবে, তখন কিভাবে সামলাবেন?” তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, “এক ঘণ্টার মধ্যে যদি পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে, তবে বিজেপি রাস্তায় নামবে বৃহত্তর আন্দোলনে।”
অন্যদিকে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, “বিজেপি নির্বাচনের আগে নতুন কাহিনি তৈরি করছে। আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। পুলিশ তদন্ত করলেই সত্য প্রকাশ পাবে।”
ঘটনার জেরে বুধবার দুপুরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ভীমেশ্বরী বাসস্ট্যান্ডে এগরা–বাজকুল রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামে। এর ফলে রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত মোতায়েন করা হয় পুলিশবাহিনী।
চণ্ডীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রশাসন জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র আকার নিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী নির্ধারিত সময়মতো সন্ধ্যায় পূজা মণ্ডপে হাজির থাকবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে স্থানীয় মহলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, “এমন ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়। যে কোনও দলের নেতা আসুন না কেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এমন কাজ বরদাস্ত করা উচিত নয়।”
চণ্ডীপুরের এই ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতিতেও তরঙ্গ দেখা দিয়েছে। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, “এটা রাজ্যের সর্বত্র বিরোধীদের ভয় দেখানোর রাজনীতি।” অন্যদিকে তৃণমূলের বক্তব্য, “ভোটের আগে বিজেপি নাটক করে মানুষের সহানুভূতি পেতে চাইছে।”


