কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা, কেন্দ্র-রাজ্যের লড়াইয়ের বধ্যভূমি শিলিগুড়ি!

নিউজ ডেস্ক: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্যের লড়াইয়ের বধ্যভূমি হয়ে উঠল শিলিগুড়ি। সোমবার রেল দুর্ঘটনার জেরে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল শৈল শহরে। সেই রেশ…

Rahul Gandhi to give up wayanad seat keep Raebareli

নিউজ ডেস্ক: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্যের লড়াইয়ের বধ্যভূমি হয়ে উঠল শিলিগুড়ি। সোমবার রেল দুর্ঘটনার জেরে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল শৈল শহরে। সেই রেশ দিনভর বজায় ছিল শিলিগুড়ির অলিতে গলিতে। গতকাল রাঙাপানিতে মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কায় দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয় শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ঘটনায় প্রাণ হারায় কমপক্ষে নয় জন। আহত বহু। আর এই ঘটনার জেরেই শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপানউতোর। সকালে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ট্যুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। তার কিছুক্ষণ বাদেই নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণ করা হয় রেলের তরফে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সেই কথা তুলে ধরে ট্যুইট করে বসেন।

এদিকে উত্তরবঙ্গের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান জেলা শাসক ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। তারপর দুপুর গড়াতেই একে একে হাই প্রোফাইল ভিভিআইপিদের আনাগোনা ক্রমশই উত্তাপ বাড়িয়েছে শিলিগুড়িতে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল গড়াতেই দিল্লি থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দর নেমে বাইকে চড়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ঞ্নব। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন তিনি। তারপরেই সোজা চলে যান উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ততক্ষণে আহতদের চিকিত্সার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে হাসপাতালে। আহতদের নিয়ে আসতেই ব্যস্ততা তখন তুঙ্গে উঠে যায় ডাক্তার,নার্সদের।

   

এরমধ্যে রেলমন্ত্রী হাসপাতাল চত্বরে পা রাখতেই হুলুস্থুল বেধে যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকা আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারপর কিছুক্ষণ বাদে সেখান থেকে বেরিয়ে যান রেলমন্ত্রী। অন্যদিকে, সন্ধ্যে নামতেই শিলিগুড়িতে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই সোজা চলে যান মাটিগাড়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। তারপরই গোটা মেডিক্যাল চত্বরে শুরু হয় দৌড়দোড়ি। হাসপাতালে প্রতিটি আহত যাত্রীকে ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে। তবে রেল দুর্ঘটনার দায় মোদী সরকারের ঘাড়ে চাপাতে মোটেও পিছু পা হননি তিনি। প্রশ্ন তোলেন অ্যান্টি কলিশন ডিভাইসের কার্যকারিতা নিয়েও।

এখানেই শেষ নয়। মুখ্যমন্ত্রী যেতেই হাসপাতাল চত্বরে পা রাখেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি আসতেই হাসপাতাল চত্বরে ভিড় জমান স্থানীয় বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। এছাড়াও শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় ততক্ষণে হেল্প ডেস্ক খুলে বসে পড়েছেন তৃণমূল-বিজেপির দলীয় সমর্থকেরা। দলীয় ঝান্ডায় লাগিয়ে ছোট ছোট ক্যাম্প বসাতেও দেখা গিয়েছে শহরে। তবে দুর্ঘটনাকে রাজনীতির সঙ্গে যাতে না মেলানো হয়, তার আহ্বান জানিয়েছেন সুকান্ত।

সন্ধ্যে নামতেই মেডিক্যাল কলেজে হাজির হন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনিও হাসপাতাল ঘুরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। দুর্ঘটনার ফলে একই দিনে একটি শহরে প্রশাসনিক প্রথা মেনে এত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের আগমন নিশ্চিতভাবেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে শহরের। যেন এই রেল দুর্ঘটনা এক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দিতার আবহের সৃষ্টি করে শহরে, এমনটাই মনে করছেন শিলিগুড়িবাসী। হাসপাতাল চত্বরে এত ভিভিআইপিদের আগমনে সাধারন রোগীদের চিকিত্সায় গাফিলতী হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে বহু রোগীর পরিবার।