গঙ্গাসাগরকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা, দাবি গোয়েন্দাদের

গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar fair) আয়োজন নিয়ে সাগরদ্বীপে চলছে সাজ-সাজ রব। প্রতি বছরই বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় মেলা হিসেবে পরিচিত গঙ্গাসাগর মেলা, এবারও তার আগমনী প্রস্তুতি…

Police Intelligence alarts over Bangladeshi infiltration ploy in Gangasagar festival

গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar fair) আয়োজন নিয়ে সাগরদ্বীপে চলছে সাজ-সাজ রব। প্রতি বছরই বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় মেলা হিসেবে পরিচিত গঙ্গাসাগর মেলা, এবারও তার আগমনী প্রস্তুতি নিয়ে পুরো অঞ্চলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ১৪ই জানুয়ারি মেলা শুরু হওয়ার আগেই নানা ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে কাঁপছে সাগরদ্বীপ। সোমবার মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গঙ্গাসাগর পৌঁছাবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিদর্শনের পর মেলা নিয়ে তৎপরতা আরও বাড়বে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মেলার প্রস্তুতির মাঝে, রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নজর রাখছে সীমান্তবর্তী এলাকায় বেআইনি অনুপ্রবেশের ওপর।

জওয়ান ভরতি পাক সেনার বাসে বিস্ফোরণ, মৃত বহু

   

বাংলাদেশ (Bangladesh) সীমান্তের একেবারে কাছে অবস্থিত গঙ্গাসাগর দ্বীপের এই মেলা, শুধুমাত্র ধর্মীয় উদযাপন নয়, বরং একটি নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জও বয়ে আনে। বিশেষ করে, মেলার সময় মানুষের আনাগোনা অনেক বাড়িয়ে দেয়, এবং এমন সময়ে বেআইনি অনুপ্রবেশের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণেই, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্প্রতি রাজ্য সরকারের কাছে এক বার্তা পাঠিয়েছে। সেই বার্তায় বলা হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে, সেদিকে নজর রাখতে হবে।

এ পরিস্থিতিতে, রাজ্য পুলিশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে, নদীপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মেলার সময় সাগরদ্বীপের নদীপথে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসেন, সেখানকার ব্যস্ততা বেশ বেড়ে যায়। পুলিশ ধারণা করছে যে, এই ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটতে পারে। সুতরাং, মেলা শুরুর আগে গঙ্গা এবং সাগরের মিলনস্থলে নিরাপত্তা আরও তীব্র করা হয়েছে। সুন্দরবন জেলা পুলিশের নেতৃত্বে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে, যাতে কোনো অনুপ্রবেশকারীকে এলাকায় ঢুকতে না দেওয়া যায়।

বরিশাল থেকে বসিরহাট হয়ে মুম্বই! শিয়ালদহে ধৃত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী তরুণী

এদিকে, সুন্দরবন জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক বৈঠকেও বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, মেলা এলাকা এবং সংলগ্ন নদীপথে ২৪ ঘণ্টা কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। রুটিন চেকিং, পেট্রোলিং, এবং নদীপথে বিশেষ নজরদারি চালানোর পাশাপাশি পুলিশের কাছে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে যে কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলেই তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। সীমান্তে আরও কঠোরতা আনার পাশাপাশি, নিরাপত্তার জন্য মেলার এলাকা এবং নদীপথে ড্রোন এবং উচ্চ প্রযুক্তির নজরদারিও ব্যবহৃত হচ্ছে।

এই ব্যবস্থাগুলি কেবল মেলা এবং নিরাপত্তা নিয়েই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক বছর ধরেই সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেআইনি অনুপ্রবেশের ঘটনা বেড়েছে, এবং এমনকি মেলার মতো বড় আয়োজনের সময়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। মেলার প্রধান আকর্ষণ হল ধর্মীয় উপাসনা, তবে সেই সঙ্গে এখানে জমায়েত হওয়া লাখো মানুষের নিরাপত্তা এবং সামগ্রিক শান্তি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

চিনা উদ্বেগ HMPV সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রস্তুত ভারত

এছাড়া, মেলার সময় বেশ কিছু সামাজিক সেবা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মেলার জন্য আসা মানুষের সুরক্ষার জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা বা অসুস্থতা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। মেলা চলাকালীন সাধারণ মানুষের সেবায় সক্রিয় থাকবে পুলিশ ও প্রশাসন।

রাজ্য সরকার এবং পুলিশ প্রশাসন এই পুরো পরিস্থিতি মেলাকে নিরাপদ এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সচেষ্ট রয়েছে। তবে, সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে, এবং সেই জন্যই সবদিক থেকে নিরাপত্তার কড়াকড়ি এবং নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।