প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে খামতি প্রচারে, ঘরে ঘরে আমন্ত্রণপত্র বিলি বিজেপির

দুর্গাপুর: প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) আসন্ন দুর্গাপুর সফরকে কেন্দ্র করে বিজেপির মধ্যেই চাপা উত্তেজনা। সার্বিক প্রচারে ঘাটতির অভিযোগ উঠেছে জেলা নেতৃত্বের তরফে। দলীয়ভাবে বড় মিটিং-মিছিল বা…

Prime Minister Narendra Modi Honoured with Ghana’s Officer of the Order Award

দুর্গাপুর: প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) আসন্ন দুর্গাপুর সফরকে কেন্দ্র করে বিজেপির মধ্যেই চাপা উত্তেজনা। সার্বিক প্রচারে ঘাটতির অভিযোগ উঠেছে জেলা নেতৃত্বের তরফে। দলীয়ভাবে বড় মিটিং-মিছিল বা পথসভা প্রায় হয়নি বললেই চলে। তাই শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি সামাল দিতে গৃহে গৃহে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভার আমন্ত্রণপত্র বিলি করছে বিজেপি। বুধবার গোপালমাঠ এলাকায় এই কর্মসূচিতে অংশ নেন দলের রাজ্য সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় ও দুর্গাপুরের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই।

গোটা দুর্গাপুর জুড়ে বিজেপির ‘মেগা ইভেন্ট’ হিসেবে এই জনসভা তুলে ধরার চেষ্টা থাকলেও প্রচারের ঘাটতি রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এখনও পর্যন্ত যথাযথভাবে সভার স্থান বা সময় জানিয়ে প্রচার হয়নি এলাকায়। ফলে মিডিয়া মারফত খবর পেলেও বহু সাধারণ মানুষই বিভ্রান্ত। এই অবস্থায় ঘরে ঘরে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে মানুষকে সভায় টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।

   

লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দুর্গাপুর সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা তাই মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছি, যাতে তারা এই ঐতিহাসিক সভার অংশ হন।”

বুধবার প্রায় ৩০টি বাড়িতে আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয় বলে জানা গিয়েছে। কর্মী এবং স্থানীয় নেতৃত্বও এই প্রচারে যুক্ত ছিলেন। যদিও এই প্রচারে খামতির কথা মানতে নারাজ বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, “খুব অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় কর্মসূচি হচ্ছে। বৃহৎ আকারে প্রচার এখনও হয়নি ঠিকই, তবে বৃহস্পতিবার থেকে চারটি জেলায় একসঙ্গে প্রচার শুরু হবে।”

১৮ জুলাই (শুক্রবার) দুর্গাপুরে থাকছে প্রধানমন্ত্রীর দুটি কর্মসূচি। একটি সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অন্যটি জনসভা—দু’টিই অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে।

এর আগে বিহার থেকে অণ্ডাল বিমানবন্দরে এসে সড়কপথে গান্ধীমোড় হয়ে নেহরু স্টেডিয়ামে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। গান্ধীমোড় থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিমি ‘অঘোষিত রোড শো’ করবেন তিনি। এই রোড শোকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন বিজেপি কর্মীরা, যারা ফুল ছুঁড়ে স্বাগত জানাবেন প্রধানমন্ত্রীকে।

প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন হবে এদিন। এর মধ্যে রয়েছে:

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প

ডিভিসির রঘুনাথপুর ও মেজিয়া ইউনিট সম্প্রসারণ

Advertisements

গেলের আসানসোল-কলকাতা গ্যাস পাইপলাইন

দক্ষিণবঙ্গে ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ

জাতীয় সড়কের ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস

ডিএসপি আধুনিকীকরণ

এই প্রকল্পগুলির উদ্বোধনের পরই প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষণ দেবেন। সভা শেষে নেহরু স্টেডিয়ামের পাশেই অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট মাঠে তৈরি হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে অণ্ডাল বিমানবন্দরে গিয়ে সেখান থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সফর নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দফায় দফায় বৈঠক করছেন। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দুর্গাপুরে সভাস্থল পরিদর্শন ও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রচারে ঘাটতি ও সাংগঠনিক অনৈক্যই এই চাপা গ্লানির মূল কারণ। এখন দেখার, শেষ মুহূর্তের ‘ডোর টু ডোর’ প্রচার কতটা মানুষকে সভামুখী করতে পারে।