কলকাতা: আগামী ১৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। ঠিক তিন দিন পর ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস উপলক্ষে কলকাতার ধর্মতলায় অনুষ্ঠিত হবে ‘মেগা র্যালি’। তার ঠিক আগেই রাজ্য সফরে আসছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, যা ঘিরে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে রাজ্য রাজনীতির পারদ। রাজনৈতিক মহলের মতে, মোদির এই সফর নিছক সরকারি কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ নয়—এর পিছনে রয়েছে দলীয় সাংগঠনিক বার্তা ও শক্তি প্রদর্শনের পরিকল্পনা।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ১৮ জুলাই দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে বিহারের দারভাঙা বিমানবন্দর থেকে রওনা দেবেন দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে। ঠিক ২টা ৪৫ নাগাদ তাঁর বিমান নামবে অন্ডাল বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি পৌঁছে যাবেন দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে। সূত্রের খবর, বিকেল ৩টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি ভাষণ দেবেন জনসভায়, যা অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে। ঠিক ৩টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাঁর সেখানে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই সফরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শুধু সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন নয়, দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তাও দেবেন। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভার আগে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সভা যে বিজেপির পাল্টা শক্তি প্রদর্শন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদির এই সফরের তাৎপর্য বহুস্তরীয়। একদিকে যেমন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা থাকবে, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি কতটা আছে, তারও ইঙ্গিত দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। মনে করা হচ্ছে, মোদির বক্তৃতায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা, কেন্দ্রের প্রকল্পে বাধা দেওয়া এবং দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে আনবেন তিনি।
রাজ্য বিজেপির মতে, ২১ জুলাইয়ের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফর কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করবে। পাশাপাশি সংগঠনের মধ্যে নতুন উদ্দীপনার সঞ্চার হবে। বিশেষ করে পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান—এই দুই জেলার সাংগঠনিকভাবে দুর্বল অংশে শক্তি সঞ্চার করাই দলের অন্যতম লক্ষ্য।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত মোদির এই সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না মিললেও, তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিজেপি জনভিত্তি হারাচ্ছে বলেই প্রধানমন্ত্রীকে আনা হচ্ছে। যদিও বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, মোদির উপস্থিতি মানেই মানুষের আস্থা ও উৎসাহ বাড়ানো।
সব মিলিয়ে, ১৮ জুলাই দুর্গাপুর সফর এবং জনসভা ঘিরে ফের একবার রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। এখন দেখার, মোদির বক্তৃতা কোন বার্তা দেয় রাজ্যবাসীকে এবং তৃণমূলের ‘মেগা র্যালি’র আগে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে বিজেপির এই পদক্ষেপ।