দিল্লির নির্দেশে থমকাল মোদীর জনসভা, তীব্র জল্পনা রাজ্যে

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও আপাতত থমকে গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Modi) ধারাবাহিক জনসভা কর্মসূচি। বিজেপি সূত্রে খবর,…

দিল্লির নির্দেশে থমকাল মোদীর জনসভা, তীব্র জল্পনা রাজ্যে

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও আপাতত থমকে গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Modi) ধারাবাহিক জনসভা কর্মসূচি। বিজেপি সূত্রে খবর, এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কোনও নতুন জনসভা হবে না রাজ্যে। যদিও এই সিদ্ধান্ত সাময়িক এবং ভবিষ্যতে তা পরিবর্তিত হতে পারে বলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ইঙ্গিত দিয়েছে।

বিজেপির পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজ্যের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অন্তত একটি করে প্রশাসনিক বৈঠক এবং জনসভা আয়োজন করার কথা ছিল। ইতিমধ্যেই মে মাসে আলিপুরদুয়ার, জুলাইয়ে দুর্গাপুর এবং অগাস্টে দমদমে তিনটি সভা সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ সভাটি ২০ সেপ্টেম্বর নদিয়ার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দিল্লি থেকে মঙ্গলবার রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে যে আপাতত এই সভা স্থগিত করা হচ্ছে।

   

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ভোটের আগে এত গুরুত্বপূর্ণ জনসভা কর্মসূচি কেন স্থগিত করা হলো? বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, এর পিছনে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের ব্যস্ততা অন্যতম কারণ। পাশাপাশি রাজ্যের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে আরও কিছু সময় দেওয়ার কৌশলও থাকতে পারে।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় গোটা দেশে ১০০টিরও বেশি জনসভা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সাফল্যের ধারা ধরে রেখে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি জেলাতে সভা করার রূপরেখা তৈরি করেছিল বঙ্গ বিজেপি। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে মোদীকেই মুখ করে প্রচার চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তবে আপাতত রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত থাকলেও সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন বা শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Advertisements

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি এখনও ভোট প্রস্তুতির প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জনসভা স্থগিতের সিদ্ধান্ত কৌশলগত, যাতে রাজ্যের স্থানীয় নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করা যায় এবং মাটির সঙ্গে সংগঠনের যোগাযোগ বাড়ানো যায়। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভা বাতিল হয়নি, বরং আপাতত বিরতি দেওয়া হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল করে একাধিক সভার ঘোষণা আসতে পারে।

অন্যদিকে, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির এই সিদ্ধান্তকে ব্যর্থতা হিসেবে তুলে ধরছে। তাদের দাবি, বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির প্রভাব ক্রমশ কমছে, তাই জনসভা আয়োজনের ঝুঁকি নিতে পারছে না বিজেপি। তবে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, এটা সম্পূর্ণ কৌশলগত পদক্ষেপ, যা ভোটের সময় বিজেপিকে শক্তিশালী জায়গায় দাঁড় করাবে।

রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদীর জনসভা স্থগিত হওয়াটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে। বিজেপি হয়তো ভোটের আগে শেষ মুহূর্তে জনসভা ও প্রচারের ঝড় তুলবে। ফলে আপাতত বিরতি হলেও রাজনৈতিক ময়দান যে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে, তা বলাই যায়।