পাটনার আঁচে বিজেপির হাতে আক্রান্ত রাজ্য কংগ্রেস কার্যালয়

পাটনার আঁচ কলকাতাতেও। নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে অপশব্দ ব্যবহার করেন রাহুল গান্ধী  (Congress)। যাতে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়ছিল। তার ই প্রতিবাদে পাটনাতে কংগ্রেস কার্যালয়ে ভাংচুর চালায়…

BJP attack kolkata congress

পাটনার আঁচ কলকাতাতেও। নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে অপশব্দ ব্যবহার করেন রাহুল গান্ধী  (Congress)। যাতে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়ছিল। তার ই প্রতিবাদে পাটনাতে কংগ্রেস কার্যালয়ে ভাংচুর চালায় বিজেপি । এবার তার আঁচ পড়ল কলকাতাতেও।

কলকাতার বিধান ভবনের সামনে শুক্রবার তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জাতীয় কংগ্রেসের (Congress)রাজ্য কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের নাম জড়িয়েছে, যিনি পূর্বে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।

   

কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপির যুব মোর্চার সদস্যরা রাকেশ সিংয়ের নির্দেশে এই ভাংচুর চালিয়েছে। কংগ্রেস নেতাদের ছবি ভাংচুর করা হয় এবং রাহুল গান্ধীর ছবিতে কালি দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য কে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ চাই। তিনি আরও বলেছেন শমীক কে তিনি সংস্কৃতিবান বলে মনে করতেন কিন্তু বিজেপির এ হেন ব্যবহারে তিনি ক্ষুব্ধ। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫০ জনের একটি দল কংগ্রেস অফিসে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচুর করে, কংগ্রেস নেতাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং কালি ছুঁড়ে মারে। এই ঘটনায় কংগ্রেসের দুই কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। বিজেপি রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে এই ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে নেমেছে। রাকেশ সিং এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।”

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে এক্স-এ লিখেছেন, “বিজেপি কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে মুম্বই এবং কলকাতায় আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর চালিয়েছে। এটি আমাদের দলের প্রতি সরাসরি আক্রমণ।” তিনি আরও জানিয়েছেন যে, কংগ্রেস কর্মীরা এই হামলার প্রতিরোধ করেছেন এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Advertisements

রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালে, তিনি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশ তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করেছিল এবং তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়াও, ২০২১ সালে পামেলা গোস্বামী মাদক মামলায় রাকেশ সিংয়ের নাম জড়িয়েছিল।

পামেলা অভিযোগ করেছিলেন যে, রাকেশ সিং তাঁর গাড়িতে মাদক পদার্থ রাখার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এই ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে, কংগ্রেস দাবি করছে যে রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।

পুলিশ এই ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। কলকাতা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভাংচুরকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। প্রায় ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে এবং বিজেপি যুব মোর্চার মুম্বাই সভাপতি তেজিন্দর তিওয়ানার নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা জনমানসে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবক্ষয়ের ইঙ্গিত দেয়। 

মোদীকে অশ্রাব্য গালিগালাজ কংগ্রেস কর্মীদের, মামলা দায়ের রাহুলের বিরুদ্ধে

পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জনগণের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছে। বিধান ভবনের আশপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এই ঘটনা কীভাবে রাজনৈতিক সমীকরণকে প্রভাবিত করে, তা দেখার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।