পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং তারপর থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের এক নতুন দিকের সূচনা হয়। তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে সমস্ত পদ থেকে অপসারণ করে এবং মন্ত্রিসভা থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে, এবং সেই মামলার শুনানি চলতে থাকে।
সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী, জেলে থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন। সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হলে জেল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসককে খবর দেন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন। তবে, আপাতত তাঁকে জেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়নি এবং তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছেই। জেলের মধ্যেই তাঁর চিকিৎসা চলছে এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই শারীরিক অসুস্থতা প্রসঙ্গে আরও কিছু তথ্য জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবারই আদালত চত্বরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই দেখা গিয়েছিল। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, যাকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত। আদালতে উপস্থিত থাকার সময় পার্থ কিছুক্ষণ অর্পিতার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি অর্পিতাকে বলেন, “আসি, তুমি ভালো থেকো।” এই কথা শুনে অনেকেই ধারণা করছেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন এবং তাঁর সম্পর্কের বিষয়ে আরও কিছু অজানা তথ্য সামনে আসতে পারে।
এদিকে, ইডির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত মঙ্গলবার কলকাতার বিচার ভবনে এই মামলার বিচার শুরু হয়েছে। আদালত চত্বরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যাওয়ার পর, বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই তাকে জামিন দিয়েছেন। তবে, শর্তসাপেক্ষে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁকে শুধুমাত্র এই মামলায় জামিন দেওয়া হবে। এর আগে, চার্জ গঠন এবং সাক্ষীদের বয়ান সংগ্রহ করতে হবে, এই নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
অন্যদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার কথা শুনে রাজনৈতিক মহলে নানা ধরনের মন্তব্যও আসছে। একদিকে, কিছু ব্যক্তি মনে করছেন যে, তাঁর শারীরিক অবস্থা আসলেই উদ্বেগজনক, অন্যদিকে কিছু মানুষ এটিকে রাজনৈতিক নাটক হিসেবেও দেখছেন। এমন পরিস্থিতিতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভবিষ্যত রাজনৈতিক জীবন কী হতে চলেছে, তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত রয়েছে।
এখন পর্যন্ত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, তাঁর বিরুদ্ধে চলমান মামলার পরিণতি এখনও পরিষ্কার নয়। বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা রেখে, সবাই অপেক্ষা করছে যাতে এই মামলার সত্যিটা সামনে আসে এবং আইন অনুযায়ী বিচার হয়।